অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিরোধী দলের নেতাদেরকে খোঁচা মেরে কথা বলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। সুযোগ পেলেই তিনি খোঁচা মারেন। আর সেটা যদি হয় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জামায়াত নেতাদের ক্ষেত্রে, তাহলেতো আর কথাই নাই। ওই যে বলে-এমনিতো নাচুড়া বুড়ি আরও পেয়েছে ঢোলের বারি। বিশেষ করে কোনো আলোচনায় যখন জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান এরশাদের প্রসঙ্গে আসে তখনই শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়েন।
রোববার জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন শুরু হয়েছে। অধিবেশনের শুরুতেই সদ্য মৃত্যুবরণকারী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের ওপর শোক প্রস্তাব আনা হয়। এই শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-খালেদা জিয়া এরশাদকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দিয়েছিল।
শুধু রোববারই সংসদে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেননি। সংসদের ভেতর ও বাইরে আরও একাধিকবার তিনি বলেছেন যে, খালেদা জিয়া এরশাদকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু এরশাদ যে হাসিনাকে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ দিয়েছিল সেটা কিন্তু তিনি একবারও বলেন নি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে একতরফা ও বিনাভোটে নির্বাচিত এমপিদের নিয়ে শেখ হাসিনা যে সংসদ গঠন করেছিলেন আইনের দৃষ্টিতে সেটা কি বৈধ ছিল? ওই নির্বাচনে ১৫৪ জন নির্বাচিত হয়েছিল বিনাভোটে। আর বাকীগুলো নিজেরাই নিজেদের প্রতীকে সিল মেরেছিল। অবৈধ এই ক্ষমতাকে বৈধতা দেয়ার জন্য তখন এরশাদের দলকে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এরশাদের জাতীয় পার্টি যদি তখন নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে বিনাভোটের এমপিদের নিয়ে সরকার গঠন করা সম্ভব ছিল না। এই এরশাদের কারণেই শেখ হাসিনা অবৈধভাবে ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু, নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দখলের কথা আজ তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন।
এছাড়া, রাষ্ট্রের সংবিধানে বলা আছে, সংসদ সদস্যরা জনগণের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। কিন্তু, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কি এদেশের মানুষ ভোট দিতে পেরেছে? ফজরের নামাজের আগেই শেখ হাসিনার গুন্ডা-পান্ডারা ব্যালট নিয়ে নৌকায় সিল মেরে বক্স ভরে রেখেছে। ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা গ্রহণ কি বৈধ? কি বলবেন শেখ হাসিনা?