অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দিন যত যাচ্ছে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটডাকাতির ভয়াবহ তথ্য ততই বেরিয়ে আসছে। নির্বাচনের পরের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তড়িগড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করলেও পরে টিআইবির অনুসন্ধানে প্রথম বেরিয়ে এসেছিল ভোটডাকাতির ভয়াবহ অবস্থা।
টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে বলেছিল, অধিকাংশ কেন্দ্রেই ভোটের আগের দিন রাতে নৌকায় সিল মেরে বক্স ভর্তি করা হয়েছে। এমন ভয়াবহ তথ্য আসার পরও বিষয়টিকে কথিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন কৌশলে এড়িয়ে যান। সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভে ফুসে উঠলেও ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার নাম করে ড. কামাল আন্দোলনকে থামিয়ে দেন।
ড. কামাল-জাফরুল্লাহরা শুধু আন্দোলনকেই থামিয়ে দেন নাই, বিএনপিকে কৌশলে এ অবৈধ সংসদেও যোগদান করতে বাধ্য করে। সরকারের এজেন্ট কামালের পরামর্শে মির্জা ফখরুলরাও অবৈধ সংসদের কাছে আত্মসমপর্ণ করেন। কথিত গণতন্ত্র উদ্ধারের কথা বলে তারা হালু-রুটির জন্য ভোটডাকাতির অবৈধ সংসদে যোগদেন।
আর এখন খোদ নির্বাচন কমিশনের ওয়াইব সাইটে প্রকাশিত ফলাফলেই নির্বাচনের ভয়াবহ ভোটডাকাতির প্রমাণ প্রকাশিত হয়েছে। যেটা প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা নিজেও স্বীকার করেছেন।
গেজেট আকারে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ১০৩টি আসনের ২১৩টি কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এটা কোনোভাবেই সম্ভব হওয়ার কথা নয়। অথচ সেটাই হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে।
এছাড়া, ৭৫টি আসনে ৫৮৬টি কেন্দ্রে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো দলের প্রার্থী একটি ভোটও পাননি। আর ৬৮৫টি কেন্দ্রে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা একটি ভোটও পায়নি। এসব নির্বাচনী এলাকাতে কি বিএনপি-জামায়াতের কোনো ভোটার ছিল না?
আরেকটি ভয়াবহ জালিয়াাতি ছিল, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয় রিটার্নিং অফিসারের স্বাক্ষরের ভিত্তিতে। ভোটের দিন রিটার্নিং অফিসাররা যে ফলাফল ঘোষণা করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্র ভিত্তিক ফলাফলের সঙ্গে মিল নেই। যেটি হয়েছিল খুলনার একটি আসনের ভোটের ফলাফল নিয়ে। যেখানে ভোটারের চেয়ে ২২ হাজার ভোট বেশি পড়েছিল। এসব থেকে বুঝা যায়, নির্বাচনের দিন যে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল সেগুলো সবই ছিল গুজামিলের।
এখন এসব ভোটাডাকতির চেয়েও রাজনীতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মানুষের মনে বড় প্রশ্ন হলো-এত বড় ভয়াবহ ভোটডাকাতির পরও বিএনপি কোনো শক্ত প্রতিবাদ করেনি কেন?
শপথ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েও মির্জা ফখরুল তার দলীয় এমপিদেরকে সংসদে পাঠালেন কেন? শেখ হাসিনার অবৈধ সংসদকে বৈধতা দিতেই কোনো প্রতিবাদ না করে চুপ করে আছেন মির্জা ফখরুল?