অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পাবনার রূপপুরে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের গ্রীন সিটির বালিশ কেলেংকারির পর এবার সামনে এসেছে রেলের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর বাসা মেরামত কেলেংকারির তথ্য। রূপপুরের বালিশ কেলেংকারিতে সারাদেশে ক্ষোভের রেশ এখনো কাটেনি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতও এনিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই বালিশ কাণ্ডে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে সরকারও। যদিও ইজ্জত রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুরের সেই প্রকৌশলীর রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করেছেন।
সরকারি সম্পদের হরিলুট চলছে রেল সেক্টরেও। বিশেষ করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে সবাই নিজের মতো করেই ভোগ করছেন সরকারি সম্পত্তি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে বাসা, বাংলো, সড়ক, অফিস ভবন মেরামতের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে।
ইদানিং চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর বাসা মেরামতের জন্য সরকারি বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন উঠার পরই আস্তে আস্তে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে।
জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জিএমের দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর বাসা মেরামতের জন্য ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন প্রধান প্রকৌশলী। বিপুল অঙ্কের এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার জেরে রেল অঙ্গনে শুরু হয় তোলপাড়। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ যায় মন্ত্রণালয় ও রেল ভবনে। এ ঘটনার সঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল জলিল সরাসরি জড়িত।
অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ২৬ মে গঠিত দুই সদস্যের কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ শেখ নাইমুল হককে। কমিটির অপর সদস্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা।
জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের যে ঠিকাদার যত বেশি ঘুষ দিতে পারেন, সেই ঠিকাদার তত বেশি কাজ পান। এর পর কাজে নয়-ছয় করে টাকা হাতিয়ে নেন ঠিকাদাররা। মেরামত কাজে বরাদ্দের এক তৃতীয়াংশের চেয়েও কম অর্থ ব্যয় করে বিল নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া নজির রয়েছে কাজ না করেও বিল তুলে নেওয়ার।
অভিযোগ রয়েছে, সিআরবি এলাকায় রেলের ভিআইপি রেস্ট হাউস মেরামতের জন্য কয়েকটি ধাপে টেন্ডার ছাড়াই প্রায় ৮০ লাখ টাকার কাজ বরাদ্দ দেন প্রধান প্রকৌশলী আবদুল জলিল। এরই মধ্যে বেশ কিছু কাজ করিয়ে নিয়েছেন মৌখিক নির্দেশে। একই ঠিকাদারকে সব কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ শতাংশ হারে অগ্রিম ঘুষও নিয়েছেন তিনি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারীর বাসা মেরামতের জন্য ২৮ লাখ বরাদ্দ দেয়ার ঘটনায় এখন পুরো রেল মন্ত্রণালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আর ২৮ লাখ টাকার বাসা মেরামত কেলেংকারি নিউজ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এখন এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে সমালোচনা। অনেকেই বলছেন-বালিশ কেলেংকারির পর এখন বাসা মেরামত কেলেংকারি শুরু হয়েছে।
অনেকেই বলছেন, দেশে বাস্তবে উন্নয়ন না হলেও দুর্নীতি-লুটপাটে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের আর উন্নয়ন দরকার নেই। সম্প্রতি বাজেট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।