অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কথিত ২ কোটি টাকা দুর্নীতির নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বান্দি করে রাখছেন এটা এখন প্রমাণিত হয়ে গেছে। কাগজে-পত্রে বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেও আসলে এটা যে এখন আওয়ামী লীগেরই একটা শাখা শেখ হাসিনার ফোনালাপ থেকে সেটাও প্রমাণ হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছে হোটেলে যাওয়ার পথে সেন্ট্রাল লন্ডনের তাজ হোটেলের সামনে অবস্থানরত যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে টেলিফোনে কথা বলার সময় শেখ হাসিনা বলেছেন, ঐ বিএনপিরে জানাই দিয়েন যে তারেক জিয়া যদি আমার সাথে বেশি বাড়াবাড়ি করে, তার মা জীবনেও জেল থেকে বের হবে না। কারণ শেখ হাসিনাকে চাপ দিয়ে কোন কিছু আদায় করা যায় না, তার বুঝা উচিত। তাদের এমপিরা জয়েন করছে। তাদের একটি ডিমান্ড ছিলো তার চিকিৎসার। আমরা কনসিডার করতে রাজি। আমার সাথে অনেকে দেখা করছে। কিন্তু আমি এখানে আসার পর যদি তারা বেশি বাড়াবাড়ি করে, আমি তাদের বলবো সরি। তোমাদের লোকরা আমার সাথে বেয়াদবি করছে। আমি দিবো না সরি।
জানা গেছে, তিনি টেলিফোনে যখন কথা বলছিলেন, তখন মোবাইলটি লাউড স্পিকারে ছিলো।
উপস্থিত অনেকেই তখন প্রধানমন্ত্রীর এই টেলিফোন আলাপটি রেকর্ড করেন। যা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই এনিয়ে রজনৈতিক অঙ্গনসহ সবমহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এনিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। সবাই বলছেন-খালেদা জিয়া জামিন পাবেন কি পাবেন না সেটা নির্ধারণ করবে আদালত। কিন্তু শেখ হাসিনা বলছেন-খালেদা জিয়া জীবনেও মুক্তি পাবে না। এরমানে-শেখ হাসিনার নির্দেশ ছাড়া যে বিচারপতিরা কিছুই করতে পারেন না সেটা আজ প্রমাণ হলো। সুপ্রিম কোর্ট এখন কার্যত আওয়ামী লীগের আদালত শাখা।
এদিকে, রাজনীতিক বিশ্লেষকরাও প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে বিস্মিত হয়েছেন। তারা বলছেন- রাষ্ট্রের একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে এমন কথা কোনোভাবেই বের হতে পারে না। এর মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। কারণ, শপথ নেয়ার সময় তিনি বলেছেন-আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুরাগ-বিরাগের ঊর্ধ্বে থাকিব। অথচ খালেদা জিয়ার জামিন ও মুক্তি নিয়ে তিনি যা বলেছেন তা সরাসরি সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে। দেশে যদি আজ আইনের শাসন থাকতো তাহলে শেখ হাসিনার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসা আর সম্ভব হতো না। শপথ ভঙ্গের দায়ে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো।