অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা করেছে বিএনপির প্রার্থীরা। দলটির কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিমধ্যে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ৭ জন প্রার্থী মামলা করেছেন। দুয়েক দিনের মধ্যে প্রতি জেলা থেকে একজন প্রার্থী মামলা করবেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার ঘোষণা দেয়ার পরই এনিয়ে রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ আইনজ্ঞদের শুরু হয় বিচার-বিশ্লেষণ। আর রাজনৈতিক অঙ্গনেও এখন বিএনপির দুইটি বিষয় নিয়েই বেশি আলোচনা হচ্ছে।
প্রথমত: এতবড় ভোট ডাকাতির পর কোনো প্রকার আন্দোলনে না গিয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিলো কেন?
দ্বিতীয়ত: নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলার ফলাফল কি বিএনপির পক্ষে আসবে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি তাদের নিজস্ব চিন্তা থেকে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাচ্ছে না। মামলার কথাটা প্রথম এসেছিল ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেনের মাথা থেকে। নির্বাচনের পর ড. কামাল আর জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপিকে আন্দোলন বাদ দিয়ে মামলার দিকে উৎসাহীত করে আসছে। যদিও আন্দোলনে না যাওয়ায় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। ভোটের পর থেকেই কঠিন আন্দোলনে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কিন্তু দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আলাল, ব্যারিস্টার মওদুদসহ কিছু সিনিয়র নেতা মামলার পক্ষে অবস্থান নেন। তারা বিষয়টি তারেক রহমানকে বুঝাতেও সক্ষম হন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ড. কামাল আর জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্ররোচনাতেই মূলত বিএনপির একটি গ্রুপ মামলাতে যাচ্ছেন। এই দুইজন মূলত বিএনপিকে আন্দোলন থেকে দূরে রাখতেই ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাচ্ছে। আর এসব হচ্ছে সরকারের ইশারাতেই।
রাজনীতিক বিশ্লেষক ও আইনজ্ঞরা মনে করছেন, এই মামলার মাধ্যমে নির্বাচনটা বৈধ হয়ে যাবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রমাণ করা হবে। কারণ, মামলার রায় বিএনপির পক্ষে আসার এক পার্সেন্ট সম্ভাবনাও নেই। কারণ, জামিন পাওয়ার পরও বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যে আদালত মুক্তি দিচ্ছে না, সেই আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশ করা বিএনপির জন্য দিবা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। এমনকি মামলা করার পর প্রাথমিক শুনানিতে মামলা খারিজ হয়ে যেতে পারে।
এরপর, আদালত যদি সরকারের পক্ষে রায় প্রদান করে তাহলে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জোট এখন যা বলতে পারছে তখন তাও পারবে না। ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে কোনো আন্দোলনও করতে পারবে না।