বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে যে আচরণ করা হচ্ছে সেটি অমানবিক ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ শনিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গতকাল খালেদা জিয়ার সাথে তার আত্মীয়স্বজনরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার বাস করার জায়গাটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। অস্বাস্থ্যকর, স্যাঁতস্যাঁতে ও ধুলাবালিতে আকীর্ণ কক্ষটিতে তাকে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। বারবার এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারা ভ্রূক্ষেপহীন থেকেছে।’
রিজভী বলেন, ‘বিপুল জনপ্রিয় নেত্রীকে পরিকল্পিতভাবেই মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে পর্যুদস্ত করতে দমনের নীতি অবলম্বনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব শক্তি প্রয়োগ করে লাল দেয়ালের মধ্যে মুক্তিহীন অন্তরীণ করে রেখেছেন। বেগম জিয়ার জামিনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে নানা কায়দা-কৌশল করে। মুক্তিপণ আদায়ের মতো আচরণ করছে সরকার তার সাথে। অর্থাৎ তাকে বন্দী করে একের পর এক শূন্য জনপদে ভোটারবিহীন নির্বাচন করা।’
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি তার ভাষণে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা দেননি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আসলে দেশের আসল মালিক জনগণের প্রকৃত ভোট দেয়ার অধিকার ও সাংবিধানিক দাবিকে উপহাস করার নতুন মাত্রা যোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ তেরো সফলতায় বিজয়ী হয়েছে এবং বিএনপির সাতটি ব্যর্থতায় পরাজয় হয়েছে। ভোটের আগের দিন রাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তিনি এখন সফলতা-বিফলতার পরিসংখ্যান দিচ্ছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ভোট ডাকাতিতে জড়িত নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলেননি। আসলে এটিই হচ্ছে তার প্রকৃত ধন্যবাদ।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত পরশু বলেছেন, বিএনপি ভেঙে যাবে। গতকাল তিনি বলেছেন, বিএনপির পরিণতি মুসলিম লীগের দিকে যাচ্ছে কি না সে আশঙ্কা করছেন। আমি বলতেছি- আওয়ামী লীগ তো ভেতর থেকে ভেঙে চুপসে গেছে। সেখানে নানা পন্থী এবং সিনিয়র-জুনিয়রের নানা ধারা। যে কারণে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি, পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করতে হয়েছে। পুলিশী ক্ষমতা যখন থাকবে না তখন তো আওয়ামী লীগের বাতি জ্বালানোর লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপির মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারেনি বলেই ওবায়দুল সাহেবের বুকে বড় জ্বালা। এজন্য তিনি বিএনপির ছিদ্র খুঁজতে আর্তচিৎকার করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবকে মনে রাখার জন্য বলবো- শকুনির দোয়ায় গরু মরে না।’
সূত্র: নয়াদিগন্ত