অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
শেখ হাসিনা এবার মন্ত্রিসভায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। পুরনো মন্ত্রিসভার ৩৬ জনকে বাদ দিয়েছেন। এবারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশই নতুন মুখ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদেরকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে শেখ হাসিনা দলের কোনো নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। যাকে তার ভাল লেগেছে তাকেই মন্ত্রিপরিষদে জায়গা দিয়েছেন। বিভিন্ন কারণে যাদের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়েছেন।
শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হলেও দলের ভেতর এনিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ পড়া আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা বিষয়টিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাদের নিজ এলাকার নেতাকর্মীসহ শুভাকাংখীরাও বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না। বঞ্চিতরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ভেতরে ভেতরে জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, সিনিয়রদের ব্যাপারে শেখ হাসিনা যদি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন তাহলে দলের অভ্যন্তরে সংকট ধীরে ধীরে আরও ঘনিভূত হতে পারে।
তোফায়েল আহমেদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত এক আওয়ামী লীগ নেতা বললেন, তোফায়েলের বিরুদ্ধেতো কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তিনি দলের জন্যও আন্তরিক। শারীরিকভাবেও তিনি সুস্থ সবল আছেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহচর। তার মতো এমন একজন ত্যাগী নেতাকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।
অপরদিকে, এবারও মন্ত্রিত্ব না পেয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে মন্ত্রী করা হলেও বাদ পড়েছেন হানিফ। দলটির ধানমন্ডির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদে থাকতে না পেরে হানিফ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
এছাড়া মো. নাসিম, শাজাহান খান, ইঞ্চিনিয়ার ও খন্দকার মোশাররফ, আমির হোসেন আমু, মাহমুদ আলীসহ মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ পড়া সিনিয়ররা শেখ হাসিনার ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করে শেখ হাসিনা তার একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা করছেন বলেও তাদের অভিযোগ। তারা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা না দিলেও দলের কর্মকাণ্ডে আর আগের মতো সক্রিয় ভুমিকা পালন করবে না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও বলছেন, সিনিয়রদের এই ক্ষোভের বহি:প্রকাশ কোনো একসময় ঘটতে পারে। বিগত ৫০ বছর ধরে যারা দলটিকে টিকিয়ে রেখেছেন আজ তাদেরকে একপ্রকার অপমান করেই বাদ দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত সাময়িক ভাল দেখা গেলেও এর ফলাফল ভবিষ্যতে খুব একটা ভাল আসবে না।