দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নির্বাচনী সহিংসতার খবর আসছে। এ পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পুলিশ। বগুড়া, কুমিল্লা, রাঙামাটি, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী ও কক্সবাজার জেলায় একজন করে নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম জেলায় দুই জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বগুড়ার কাহালু উপজেলার বাগৈল ভোটকেন্দ্রে দুপুর ১টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সাথে বিএনপি-জামাত সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে ২ জন আহত হওয়ার পর তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখানে একজনের মৃত্যু হয়। বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুইঞা খবরটি নিশ্চিত করেন।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানিয়েছেন, জেলার শিবপুরের কুন্দেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নরসিংদি-৩ আসনের এক স্বতন্ত্র এবং নৌকার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় দুপুর ১২টার দিকে। এই ঘটনায় মিলন মিয়া নামে আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন।
রাজশাহী-৩ আসনে মোহনপুর উপজেলায় পাকুড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষে মেরাজউদ্দিন নামে ২২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়। অন্যদিকে টানোরের ওসি রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, টানোরের মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আশেপাশে দুপুরের দিকে সংঘর্ষে একজন আহত হয়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র এএসপি আব্দুর রাজ্জাক তথ্যটি নিশ্চিত করেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান বিএনপি-আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় নিহত মেরাজউদ্দিন মাথায় আঘাত পান। তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলে দাবি করা হচ্ছে।
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার আলমগির কবির খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, রাঙ্গামাটির কাউখালীতে সকালে আওয়ামী লীগের একজন পোলিং এজেন্ট মোটরসাইকেল করে কেন্দ্রে যাবার সময় হামলার মুখে পড়েন। তাঁকে লাঠিসোটা দিয়ে পেটানো হলে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মারা যান।
তিনি একই সাথে ঘাগড়া ইউনিয়নের যুবলীগের সেক্রেটারি বলে জানিয়েছেন মি. কবির। তিনি হামলার জন্য বিএনপি কর্মীদের দায়ী করেছেন। এরপর ঐ এলাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়। তাতে আরও দশজন আহত হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম ইমরান ভুঁইয়া বিবিসিকে জানিয়েছেন, গতরাত দুইটার দিকে বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে একটি কেন্দ্রের পাশে পুলিশের সাথে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছে।
তিনি তাদের ‘সশস্ত্র ক্যাডার’ বলে উল্লেখ করেছেন। গত রাত ২টার দিকে বড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রের পাশে এই ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম ইমরান ভুঁইয়া দাবি করছেন, “তারা সেখানে ওৎ পতে বসেছিলেন।”
চট্টগ্রামের পটিয়ার পশ্চিম মালিয়াপাড়ার একটি কেন্দ্রের সামনে নির্বাচনী সহিংসতায় একজন নিহত হয়েছে। তবে তার দলীয় পরিচয় সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলাশ সুপার মো সাখাওয়াত, চান্দিনার একটি কেন্দ্রে বিএনপির কর্মীরা হামলা করলে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। কয়েকজন আহত হয় এবং হাসপাতালে নেয়ার পর একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদরে নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একদল দুষ্কৃতিকারী কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়।
সেসময় পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত হয়। নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তবে তিনি কোন দলের তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি। খবরটি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় সাংবাদিক আজিজুল সঞ্চয়।
সূত্র: বিবিসি বাংলা