অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
এবার ভিন্ন কৌশলে এগুচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোট। সংলাপে কোনো দাবি না মানার পরেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোট। আর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই অস্বস্তিতে পড়ে যায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার হয়রানির মাধ্যমে দেশের বৃহত্তর এই রাজনৈতিক জোটের নেতাকর্মীদেরকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার।
এরপর প্রচারণা শুরুর পর থেকেতো সারাদেশে একদলীয় হামলা-মামলা, ভাঙচুর, মারধর, গুলি, বাসা ও অফিসে আগুন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো এবার বিনাভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি জোটকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে একযোগে সারাদেশে হামলা-ভাঙচুর চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের হামলার জবাবে বিএনপি-জামায়াতও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে এমন খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
প্রতিদিন হামলা, মামলা, ভাঙচুর ও মারধরের শিকার হয়েও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোটের নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন তারা কোনোভাবেই নির্বাচন থেকে দূরে সরবে না। সরকারের ষড়যন্ত্র ও উস্কানিতে তারা কোনোভাবেই পা দেবে না। ভোটের দিন পর্যন্ত তারা টিকে থাকার চেষ্টা করবে।
ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোটের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, তারা এবার ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবে। নির্বাচনী মাঠে তাদেরকে নামতে না দিলেও তারা এবার নির্বাচন থেকে সরে যাবে না। ভোটে থাকাই হলো এবার তাদের চূড়ান্ত টার্গেট। একাধিক গোপন জরিপের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে ভোটাররা কোনোভাবে কেন্দ্রে যেতে পারলেই নৌকার চরম ভরাডুবি ঘটবে। এখন তাদের একমাত্র টার্গেট হলো ভোটারদেরকে কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া।
জানা গেছে, এজন্য তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে চাপে রাখার পাশাপাশি নিজেরাও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্যই তারা একটি করে কমিটি গঠন করছে। কমিটির নেতৃত্ব কে দেবে এবং সদস্য হিসেবে কারা থাকবে সেই তালিকা প্রকাশ করবে না ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোট। আপাতত তারা ভোটের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘাত-সংঘর্ষেও যাবে না। সর্বোচ্চ শক্তিটা তারা ভোটের দিনই প্রয়োগ করবে।
এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে একটি করে মোবাইল টিমও থাকবে। এ টিমের কাজ হবে কেন্দ্র দখলের আশঙ্কা দেখা দিলেই রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন, নিয়োজিত সেনাবাহিনী ও জোটের নেতাদেরকে জানানো।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, কেন্দ্র দখল, জালভোট, ব্যালট ছিনতাই ঠেকাতে ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষকে নিয়ে প্রতিহত করবে। আর মোবাইল টিমটি এই কেন্দ্র দখলের খবর বিভিন্ন জায়গায় জানিয়ে দেবে।
এছাড়া ভোটের দিন রাতে কোনো কেন্দ্রে ঢুকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নৌকায় আগেই সিল মেরে রাখে কি না সেটাও মনিটরিং করবে মোবাইল টিম। এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা দেখলেই তারা কেন্দ্রের মনিটরিং সেলকে জানিয়ে দেবেন। কেন্দ্রের মনিরটিং সেল থেকে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেয়া হবে এবং তাদেরকে চাপে রাখা হবে।
ঐক্যফ্রন্ট নেতারা মনে করছেন, তারা যেভাবে পরিকল্পনা করেছেন তাতে আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির খুব বেশি একটা সুযোগ পাবে না। আর ভোটাররা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারলেই নৌকার পরাজয় নিশ্চিত।