তামিম হাশেমী
বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বইছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক অন্যরকম আমেজ। খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ছাত্র, ব্যাবসায়ীরাও ভাবছেন কি হবে এই নির্বাচনে? এবারের নির্বাচনে একটু নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে জামায়াত নেতাদের আত্মগোপনে থেকেও নির্বাচনে সরব ও প্রফুল্লভাবে নমিনেশন ক্রয় করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
এমনি প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের মহাসচিব রাজধানী ঢাকায় নির্বাচন না করলেও নিবন্ধন বাতিল হওয়া দেশের বৃহত্তম ইসলামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিব ডা. শফিকুর রহমান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল কিসের ওপর ভর করে ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) এলাকার মত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে উদ্যত হয়েছেন? তাহলে কি কোন নিশ্চিত সম্ভাবনাকে সামনে রেখে তিনি অগ্রসর হচ্ছেন? দৃশ্যত এই আসনে জামায়াত ছাড়া অন্যান্য কোন রাজনৈতিক দলের তেমন হেভিওয়েট প্রার্থী নেই।
ঢাকা -১৫ আসনে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের অতীত বা রাজনৈতিক ক্যারিয়ার পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ডা. শফিকুরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার সবার চেয়ে এগিয়ে। তিনি পেশাগত জীবনে সুনামের সাথে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এদেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। রাজনৈতিক দিক থেকে তিনি অত্যন্ত ক্লীন ইমেজের একজন নেতা।
শত জুলুম নীপিড়ণের মধ্যেও তিনি দুঃস্থ মানুষের মাঝে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, ভূমিকা রাখতে সমর্থ হয়েছেন জাতীয় রাজনীতিতে। সাধ্যমত চেষ্টা করছেন ছিন্নমূল ও শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে। যা অল্প সময়ের মধ্যে জনমনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অর্জন করেছেন তুমুল জনপ্রিয়তা।
তিনি একাধারে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা, ও ‘পালস’ সহ অনেকগুলো সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
ডা. শফিকুর শুুধুমাত্র ব্যাক্তি ইমেজেই কি এই নির্বাচনী যাত্রায় নেমেছেন ? দৃশ্যত তা মনে হচ্ছে না। মিরপুর কাফরুল এলাকার মানুষের মাঝে এক ধরনের উদ্দীপনাকে তিনি মূলত টার্গেট করেছেন। এলাকার বর্তমান ও অতীতের সকল জনপ্রতিনিধি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে আসতে ব্যর্থ হয়েছেন।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে এলাকার জনগণ একজন নির্মোহ, ইসলাম প্রিয় নেতাকে কাছে পেতে চায়। এই এলাকার সকল মানুষের মাঝে একধরনের ইসলামপ্রিয়তা বহুকাল ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই এলাকায় গড়ে তুলেছেন অনেক মাদ্রাসা, মসজিদ, স্কুল-কলেজসহ অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জামায়াতের সাবেক জনপ্রিয় নেতা মীর কাশেম আলী। সরকার যুদ্ধাপরাধের মামলায় মীর কাশেম আলীকে ফাঁসি দেয়। মীর কাশেম আলীর শূণ্যতা পূরণ করতে পারবেন ডা. শফিক বলে এলাকার জনগণ মনে করেন। আর জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা জনগণের এই আকাংঙ্খাকে পূর্ণ করতে এই আসনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন।
ডা.শফিকের নির্বাচনে অংশ নেয়াকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মানুষ যেমন আশান্বিত হয়েছেন, তেমনি দলের নেতা-কর্মীরাও হয়েছেন অনেক বেশি উজ্জীবিত। এখন দেখার অপেক্ষা সামনের নির্বাচনে ডা. শফিককে ঘিরে এই এলাকার ও দেশের মানুষের আগ্রহের প্রতিফলন কতটুকু ঘটাতে পারে দলীয় কর্মীরা।