অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
‘ভোট ডাকাতির সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন’ শিরোনামে গত সপ্তাহে অ্যানালাইসিস বিডিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। এজন্য তারা ভোট ডাকাতির যত উপায় আছে সকল পথ প্রস্তুত করে রেখেছে। তবে আওয়ামী লীগের এসব গোপন পরিকল্পনা আস্তে আস্তে ফাঁস হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ভয়ানক দুইটি গোপন ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে।
প্রথমত, নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বাদে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন তারা হলেন রিটার্নিং অফিসার। সারাদেশের সেই রিটার্নিং অফিসারদের সঙ্গে সরকারের গোপন বৈঠকের তথ্য ফাঁস হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর রিটার্নিং অফিসারদেরকে ঢাকায় এনে তাদেরকে ব্রিফ করেছে নির্বাচন কমিশন। ব্রিফ শেষে নিটার্নিং অফিসাররা গোপনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে চলে যান। সেখানে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। যা আইনগতভাবে মারাত্মক অপরাধ। এবিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং অফিসাররা নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায়। সরকারের লোকজনের হুকুম মানতে তারা বাধ্য নন। কিন্তু এই আইন অমান্য করে রিটার্নিং অফিসাররা গোপনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।
রিটার্নিং অফিসারদের এই গোপন বৈঠকের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই সারাদেশে এই নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়।রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ এটাকে সরকারের ভয়াবহ গোপন ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করছেন।
দ্বিতীয়ত, দলনিরপেক্ষ লোকদেরকে মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগ গোপনে সারাদেশে তাদের দলীয় লোকদেরকে নিয়োগ দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যাদেরকে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশই আওয়ামী লীগের লোক। আর এমনই একটি গোপন তালিকা প্রকাশ হয়ে গেছে খুলনার হরিণটানা থানায়।
জানা গেছে, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করেছে খুলনার হরিণটানা থানা পুলিশ। সেই তালিকায় দেখা গেছে, চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৪ জন শিক্ষকের নাম। এদের ভেতরে ৬৩ জন বা ৮৫ শতাংশই আওয়ামী লীগ সমর্থক। ছয়জন বা ৮ শতাংশ বিএনপি সমর্থক। চারজন বা ৫ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। একজন শিক্ষক কোনো দল করেন না বলে পুলিশের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত রোববার খুলনার হরিণটানা থানা পুলিশ থেকে এক মেইল বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
হরিণটানা থানার ১১৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার নিয়ে ওসি হরিণটানা নামের ইমেইল আইডি থেকে সাংবাদিকদের কাছে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে ছবি ও গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ফেনসিডিল উদ্ধারের খবর জানানো হয়।
কিন্তু ওই খবরের নিচে ছিল খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সিটি স্পেশাল ব্র্যাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো হরিণটানা থানার ওসির একটি আবেদনপত্র। এতে বিষয় হিসেবে লেখা ছিল : প্রিজাইডিং/সহ. প্রিজাইডিং/পোলিং অফিসারদের নামের তালিকা প্রেরণ প্রসঙ্গে।
চিঠিতে বলা হয়, যথাযথ সম্মান পূর্বক উপযুক্ত বিষয় প্রেক্ষিতে আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে প্রিজাইডিং/ সহ. প্রিজাইডিং/ পোলিং অফিসারদের নামের তালিকা নিম্নোক্ত নির্ধারিত ছক মোতাবেক প্রদান করা হলো।
সেই তালিকায় ছিল হরিণটানা থানাধীন চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৪ জন শিক্ষকের তালিকা। তালিকায় শিক্ষকদের নাম, পদবি, মোবাইল নম্বর, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াত নামে ছক ছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। তাই তারা আগ থেকেই ভোট ডাকাতির সব পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছে। এখন আস্তে আস্তে সবই বেরিয়ে আসবে।