অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন সংগ্রহের তৃতীয় দিন বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে আসা কর্মীদের রাস্তা থেকে সরাতে গেলে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ।
দুপুর একটার পর থেকে প্রায় এক ঘন্টা ধরে চলমান এই সংঘর্ষে পুরো নয়াপল্টন এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। এই সংঘর্ষের ঘটনায় ১৩ পুলিশ সদস্যসহ আহত হয় অন্তত অর্ধশতাধিক। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপরীতে পুলিশকে খুবই নমনীয় মনে হয়েছে। নেতাকর্মীদের উপর পুলিশকে তেমন কঠোর হতে দেখা যায় নি। পুলিশের নাগের ডগায় বিএনপি নেতাকর্মীরা আক্রমণাত্মক স্লোগান দিলেও তারা অ্যাকশনে যায়নি। যা পুলিশের গত ১০ বছরের চরিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীত। একাদশ নির্বাচনের দেড়মাস আগে পুলিশের এমন ভূমিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন বিশ্লেষকরা।
পুলিশের অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে, বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর পুলিশকে কঠোর হওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু পুলিশ তাতে অস্বীকৃতি জানায়। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর কঠোর হওয়ার নির্দেশ উপেক্ষা করে।
সূত্রটি আরো জানায়, নির্দেশ উপেক্ষা করার পর মন্ত্রী ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াকে টেলিফোন করেন। ডিএমপি কমিশনার তার অধঃস্তনদের কল করলে তারা আলোচনা করে অ্যাকশনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এডিসি পর্যায়ের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের সময় বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে। যেহেতু তারা নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ে নিজেদের উপর আক্রমণের পরিবেশ পুলিশ তৈরি করতে চায় না। এজন্য নয়াপল্টনে তারা সতর্ক অবস্থানে ছিল এবং অ্যাকশনে যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আর মাত্র দেড় মাস বাকি। ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন বিএনপি বয়কট করলেও আসন্ন নির্বাচনে তারা অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাছাড়া ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে বিরোধী দলগুলো বৃহত্তম ও শক্তিশালী জোট গঠন করায় সরকারের পাশাপাশি প্রশাসনেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। নির্বাচন কিছুটা সুষ্ঠু হলেও বিএনপি নেতৃত্ত্বাধীন জোট ক্ষমতায় চলে আসবে। এমন আশঙ্কা থেকেই পুলিশ ও প্রশাসন এখন থেকে বিএনপির প্রতি নমনীয় হওয়ার চেষ্টা করছে। যা বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের ভূমিকা দেখে অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে।