অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে বিরোধীদল গুলোর সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংলাপ বুধবার শেষ হয়েছে। চলমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দুই দফা সংলাপ করেও কোনো সমাধান আসেনি। সরকার তাদের গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলোই মানেনি। দাবি আদায়ে এখন তারা আন্দোলনের পথেই হাটার ঘোষণা দিয়েছে। এসব নিয়ে এখন দেশের রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে, আগামী নির্বাচন নিয়ে সংলাপে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় ২০০৬ ও ২০১৪ সালের মতো রাজনীতিতে আবারো বড় ধরণের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশিষ্টজনেরা। অপরদিকে, বিরোধীদলগুলোর মতামত উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা জাতির দেয়া ভাষণের পর তফসিল ঘোষণা করবেন। এই তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দেশে সংঘাতের সূচনা হতে পারে বলেও মনে করছেন সচেতন মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের দাবি না মানা ও তড়িগড়ি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পেছনে আওয়ামী লীগের দুইটি উদ্দেশ্য রয়েছে।
প্রথমত: আগামী নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপিকে এমন সুযোগ করে দেবে না যাতে তারা ক্ষমতায় আসতে পারে। শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি কোনোভাবেই ড. কামাল, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিএনপিকে ক্ষমতায় বসতে দেবেন না। শেখ হাসিনার কাছে তথ্য আছে, বর্তমানে বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তার পরিবার যে চরম সংকটে পড়েছে, ক্ষমতার পালাবদল হলে শেখ হাসিনা, তার পরিবার এবং দলকেও এমন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
এমনকি শেখ হাসিনার উপদেষ্টারা তাকে বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারলে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০০৬ সালের পল্টন হত্যাকাণ্ড, জামায়াত নেতাদের ফাঁসি, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমান আযমী ও ব্যারিস্টার আরমানসহ শত শত নেতাকর্মীকে গুম-অপহরণের দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এরপর দুর্নীতি, লুটপাটতো আছেই। তাই শেখ হাসিনার প্রথম টার্গেট হলো ক্ষমতা ধরে রাখা। সংসদ ভেঙ্গে তিনি নির্বাচন দেবেন না।
দ্বিতীয়ত: ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলনের মুখে এবং আন্তর্জাতিক চাপে যদি ক্ষমতা ধরে রাখতে না পারে তাহলে নিরাপদ প্রস্থানের জন্য সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। জানা গেছে, সেনা প্রধান আজিজকে শেখ হাসিনা বলেও দিয়েছেন যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে আপনাদেরকে হাল ধরতে হবে। আর আমাদের সকল নেতাকর্মীকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
এখন এই দুই টার্গেট নিয়েই সামনে এগুচ্ছে আওয়ামী লীগ। নিরাপদ প্রস্তানের জন্য যেটাকে সহজ মনে করছে সেই পথেই হাটবে আওয়ামী লীগ।