অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে দেশের রাজনীতিতে সংকট ততই তীব্র হচ্ছে। বলা যায়- নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। আওয়ামী লীগ যেমন একতরফা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক তেমনি বিরোধীজোটও নির্বাচন ঠেকানোর জন্য মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। চলমান সংলাপের মাধ্যমে সংকট নিরসন না হলেও রাজনীতিতে সংঘাত যে আবারো আসন্ন সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিন্তু, চলমান এই সংকটের মধ্যেই আগামী বৃহস্পতিবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে দেশের সবচেয়ে জনসমর্থিত রাজনৈতিক জোট জাতীয় এক্যফ্রন্ট ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি এখনই নির্বাচনের তফলিস ঘোষণা না করতে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। জনমতকে উপেক্ষা করে সরকারের টার্গেট পূরণ করতেই তারা সব কিছু করে যাচ্ছেন।
তবে রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ মনে করছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো এবার আর বৃহত্তর রাজনৈতিক দলগুলোকে বাদ দিয়ে একতরফা নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের পক্ষে সহজ হবে না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে লক্ষ্যে ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও বিএনপির নেতৃত্বে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের এই জোটকে সমর্থন দিয়েছে।
বিশেষ করে সর্ববৃহৎ এই জোটের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগের পুরনো লোক। যার কারণে দেশের বামপন্থী দলগুলোর সমর্থনও আছে এই জোটের প্রতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সরকারকে বুঝানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি প্রস্তুতি থাকবে বড় ধরণের আন্দোলনেরও। সরকার যদি কোনোভাবেই তাদের দাবি না মেনে একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা করে তখন নির্বাচন প্রতিহতে মাঠে নামবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো-আওয়ামী লীগকে এবার একতরফা নির্বাচন করতে কোনোভাবেই দেবে না।
ঐক্যজোট নেতারা মনে করছেন, খুন, হত্যা, গুম-অপহরণ, নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে আওয়ামী লীগের অতি সুবিধাভোগী কিছু নেতাকর্মী ছাড়া সবাই বর্তমান সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। হামলা-মামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ডাক দিলেই জনগণ মাঠে নেমে আসবে। যা ঠেকানো সরকারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।
আর নির্বাচন কমিশনকেও এখন থেকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আর কোনো বিষয়ে অনুরোধ করবে না। জনমতকে উপেক্ষা করে অতিউৎসাহী হয়ে নির্বাচন কমিশন যদি কিছু করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ঐক্যফ্রন্ট। সোমবার বিকেলে ইসিতে গিয়ে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা নির্বাচন কমিশনারদেরকে কিছু হালকা আভাসও দিয়ে এসেছেন। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে ভবিষ্যত পরিণতির কথাও নির্বাচন কমিশনারদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে আসছেন।