অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ড. কামাল হোসেন, আসম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না ও বিএনপির সমন্বয়ে নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আর এই জাতীয় ঐক্য গঠনের শুরু থেকেই নানান ধরণের ছলচাতুরি করে আসছিলেন বিকল্পধারার সভাপতি বি. চৌধুরী ও তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরী। কিন্তু, ছলচাতুরি করে বাপবেটা সফল হতে পারলেন না। তাদেরকে বাদ দিয়েই আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বি. চৌধুরীর আবদার ছিল বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে তিনি কোনো ঐক্যে যাবেন না। জানা গেছে, ড. কামাল হোসেন, আ স ম রব, মাহমুদুর রহমান মান্না বি. চৌধুরী ও তার ছেলেকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, জামায়াতকে আমরা আমাদের জোটে নেব না। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ভিন্ন একটি জোট। কিন্তু বি. চৌধুরী তার অযৌক্তিক দাবিতে অটল।
জাতীয় ঐক্যের নেতাদের কাছে এমনও তথ্য এসেছে যে, বি. চৌধুরী ও তার ছেলে মূলত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এরপরই চৌধুরী পরিবারকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠনের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শুরুর দিকে জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে খালেদা জিয়ার মুক্তি চওয়া যাবে না এবং তারেক রহমানকে দেশে আনার উদ্যোগ নেয়া যাবে না এসব প্রস্তাব মূলত বি. চৌধুরীর পক্ষ থেকে দেয়া হয়।
জানা গেছে, মাহি বি. চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের সঙ্গে ব্যবসা করেন। জয়ের পরামর্শেই মূলত মাহি তার বাবাকে দিয়ে এসব প্রস্তাব করাচ্ছেন। ইতিমধ্যে যা ফাঁসও হয়েছে।
জাতীয় ঐক্যের চুক্তিপত্রে একসময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ স্বাধীনতা বিরোধী বলে উল্লেখ করা হয়েছিলো। প্রত্যক্ষ স্বাধীনতা বিরোধী হিসেবে তারা জামায়াত বুঝলেও পরোক্ষ স্বাধীনতা বিরোধী নিয়ে গণ্ডগোল বাধে। পরে ঐক্যের নেতারা জানতে পেরেছেন, এই শব্দ দুইটি মাহি বি. চৌধুরী বসিয়েছেন। পরোক্ষ স্বাধীনতা বিরোধী বলতে তিনি এখানে বিএনপিকে বুঝিয়েছেন। এনিয়ে তখন ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়।
অবশেষে বৃহত্তর সেই ঐক্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যাত্রা শুরু করেছে। এবং এই ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে জামায়াতকে বাদ দিতে গিয়ে বি. চৌধুরী এবং তার ছেলে নিজেরাই বাদ পড়ে গেলেন।
তবে বিষয়টি এখানেই শেষ হয়নি। এই জাতীয় ঐক্যকে কেন্দ্র করে এখন বি. চৌধুরীর দল বিকল্পধারায়ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বি. চৌধুরী ও তার ছেলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করায় দলটির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শাহ আলম বাদল ও কৃষিবিষয়ক সম্পাদক জানে আলমকে আজ বিকেলে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাদল ও জানে আলম শুরু থেকেই সরকার বিরোধী এই জাতীয় ঐক্যে যোগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা বিভিন্নভাবে চৌধুরী পরিবারের ওপর চাপও সৃষ্টি করে আসছিলেন। তাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগরসহ মাঠ পর্যায়েরও অনেক নেতাকর্মী জাতীয় ঐক্যে যোগদিতে একমত। বহিষ্কৃত দুই নেতা যেকোনো সময় নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোদ দিতে পারে।