অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন মানবাধিকার লঙ্ঘন, খুন-গুম, অপহরণ, জনগণের ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ, ক্রসফায়ারের নামে বিনাবিচারে হত্যা, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার-নির্যাতনসহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই কথা বলে আসছে। প্রতিবারই তারা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু কে শুনে কার কথা? শেখ হাসিনা নিজেকে এখন পরাশক্তির একজন হিসেবেই মনে করেন।
বিগত দিনগুলোতে শেখ হাসিনা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রকে পাত্তাই দেয়নি। শেখ হাসিনার ধারণা হলো-প্রতিবেশী দেশ ভারত যেহেতু পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র আর ঠেকাতে পারবে না। এ চিন্তা থেকেই শেখ হাসিনা যা খুশী তাই করে যাচ্ছেন। বিরোধীমতকে দমন করার জন্য যখন যে আইন প্রয়োজন হয় তাই পাস করছে। আর খুন-গুম ও হত্যার মাধ্যমে সারাদেশকে একটি বধ্যভূমিতে পরিণত করেছেন। শেখ হাসিনা এখন এতটাই শক্তিশালী যে, দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলা করতেও কোনো দ্বিধা করেন না।
তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, দীর্ঘদিন পরে হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জালে আটকা পড়েছেন শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় ডিনার শেষ করে ফেরার পথে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। মার্কিন দূতাবাস মনে করছে, বার্নিকাটকে হত্যার উদ্দেশ্যেই তার গাড়িতে হামলা করা হয়েছে।
তাই বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র খুব সহজভাবে নিচ্ছে না। রাষ্ট্রদূতের ওপর হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র নিজের দেশের ওপর হামলা বলেই মনে করছে। এ ঘটনার পর ট্রাম্প প্রশাসন শেখ হাসিনার সরকারের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনকে তলব করেছে। তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বার্নিকাটের ওপর হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামীতে বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির মতো আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ বাংলাদেশে পরিবর্তন চাচ্ছে। বলা যায়-এই দুই শক্তি এখন শেখ হাসিনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দফতরেও চলে এসেছে। যার কারণে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন শেখ হাসিনাকে সরানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন।
অপরদিকে, বার্নিকাটের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে ভারতও চুপ করে আছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারত এখনো শেখ হাসিনাকে কিছুই বলেনি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ভারতও এখন আর শেখ হাসিনাকে চাচ্ছে না। কারণ, যা স্বার্থ আদায়ের ছিল সবই হয়েছে। ভারতের টার্গেট অন্য কাউকে ক্ষমতায় এনে আবার নতুন করে স্বার্থ সিদ্ধির ব্যবস্থা করবে।