অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে হাতুড়ি দিয়ে ও রাস্তায় ফেলে নৃশংস ও মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে আন্দোলন দমন করলেও সরকারের আতঙ্ক কাটছে না। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও স্বীকার করেছেন যে সম্প্রতি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের সময় এক রাত তিনি ঘুমাতে পারেন নি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল যে, প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কোটা আন্দোলনকারীরা আবারো মাঠে নামতে পারে। আবার নামলে পরিস্থিতি আগের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে। এরপরই আন্দোলনের নেতাদের ওপর নির্মম নির্যাতনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
গত সপ্তাহে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্রে। এনিয়ে সব মহলে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমন নির্মম ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহলও।
গত সপ্তাহে ছাত্রদের এই আন্দোলনকে ন্যায়সঙ্গত বলে দাবি করেছে জার্মান। আর সোমবার যুক্তরাষ্ট্র এক বিবৃতিতে বলেছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে তারা থাকবে। শিক্ষার্থীদের চলমান বিক্ষোভকেও তারা সমর্থন দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই বিবৃতির পর সরকারের ভেতর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের নীতিনির্ধারনী মহলও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
সরকার মনে করছে, বিগত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে যে আরব বসন্তের সৃষ্টি হয়েছে এর নেপথ্যে রয়েছে পশ্চিমাদের ভূমিকা। কিছু দিন আগেও ইরানে দ্রব্যমূল্যকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী যে বিক্ষোভ হয়েছে এর পেছনেও যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ হাত ছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এটাকে প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়েছে।
এরপর সম্প্রতি জর্ডানেও দ্রবমূল্য ও বেকার সমস্যাকে কেন্দ্র করে জনবিক্ষোভের মুখে দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করছেন, এসব আন্দোলনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভুমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ইস্যু করে কয়েকটি দেশ সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরণের কিছু করতে পারে বলে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের ধারণা। তাই, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া বিবৃতির পর থেকে খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখছে সরকার।