অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সম্মেলন পরবর্তী ২ মাস পেরিয়ে গেলেও ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি এখনো ঘোষণা দিতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সম্মেলনে কমিটি ঘোষণার দাবি উঠলেও কৌশলে পদপ্রত্যাশীদের দাবিকে এড়িয়ে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
পদপ্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত দেখে তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে কমিটি ঘোষণা করার কথা বলে ২ মাস পার করলেন। নতুন কমিটি ঘোষণা না করায় ছাত্রলীগের ভেতরেও বড় ধরণের কোন্দল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
সর্বশেষ বুধবার রাতে গণভবনে পদপ্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। বিভিন্ন পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো, বুধবারও ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা না দিয়ে আরও সময় নিলেন শেখ হাসিনা।
কয়েক দফা বৈঠক করেও ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করতে না পারায় এনিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে নানান ধরণের আলোচনা হচ্ছে।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২টি কারণে শেখ হাসিনা এখন ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করছেন না।
প্রথমত: বর্তমানে ছাত্রলীগ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত। প্রতিদিনই তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি খুনাখুনি করছে। আর কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগে এখন একাধিক গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য সবাই মুখোমুখি অবস্থানে আছে। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা শেখ হাসিনাকে জানিয়েছে যে, প্রত্যাশীত পদ না পেলে কমিটি ঘোষণার পর পরই ছাত্রলীগের মধ্যে বড় ধরণের রক্তপাতের ঘটনা ঘটতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এ রিপোর্টের পরই শেখ হাসিনা কমিটি ঘোষণা নিয়ে গড়িমসি করছেন।
দ্বিতীয়ত: চলমান কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিলেও প্রধানমন্ত্রী আসলে এটাকে কৌশলে দমন করার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগকে কাজে লাগাচ্ছেন। জানা গেছে, গত কয়েকদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে সেটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করেছে।
তারপর ছাত্রলীগের ভেতর থেকেও বড় একটা অংশ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা মনে করছেন, এ মুহূর্তে যদি নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয় তাহলে প্রত্যাশীত পদ যারা পাবে না তারা গিয়ে কোটা বাতিলের আন্দোলনে যোগ দেবে। তারা পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করবে। তখন সরকার এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে। এসব বিষয় চিন্তা করে ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করছেন না শেখ হাসিনা। কিন্তু, কাকে কোন পদ দেবেন সেটা তিনি অনেক আগেই চূড়ান্ত করেছেন।
এছাড়া বর্তমানে কোটা আন্দোলন দমাতে যেই নেতারা বেশি অবদান রাখতে পারবে তাদেরকেও নেতৃত্বে আনার চিন্তা করতে পারেন শেখ হাসিনা। এজন্য আগে থেকে তালিকা প্রয়োজনে চেইঞ্জও করতে পারেন তিনি। এমন আশা থেকেই ছাত্রলীগ নেতারা কোটা আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে সবাই নিজেদের কৃতিত্ব প্রকাশের চেষ্টা করছে।