অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঘোষণা করার কথা রয়েছে। খালেদা জিয়ার এ রায়কে ঘিরে এখন সারাদেশে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপি বলছে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হলে সারাদেশে আগুন জ্বলবে। এর মাধ্যমে তারা সরকার পতনের আন্দোলনও শুরু করবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।
অপরদিকে, সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপিকে তারা মাঠেই নামতে দেবে না। বিএনপি আন্দোলনে নামলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলা যায়, খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে এখন সরকার ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থান করছে। আর রায়কে কেন্দ্র করে বড় ধরণের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন বিশিষ্টজনেরাও।
এদিকে রায়কে সামনে রেখে গত সপ্তাহে ২০ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে বিএনপির এ কঠিন মুহূর্তে জামায়াত পাশে থাকবে। তবে জামায়াত কীভাবে বিএনপির পাশে দাঁড়াবে সেটা জানা যায়নি।
২০ দলের এই বৈঠকের পর থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াতের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। কেউ লিখছেন বিএনপির পাশে থাকছে না জামায়াত। আবার কেউ লিখছেন এ সুযোগে জামায়াত সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করবে।
তবে জামায়াত নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াতকে নিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে সবগুলোই অতিরঞ্জিত। বিএনপির বিপদের সময় জামায়াত পাশে থাকবে না এটা যেমন ঠিক নয় তেমনি রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির মাঠে নেমে সরকারের পতন ঘটাবে সেটাও ঠিক নয়।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজা হলে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত মাঠে নামবে কিনা জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা অ্যানালাইসিস বিডিকে বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্যই মূলত ২০ দলীয় জোট গঠন হয়েছে। জোটের প্রধান দল হলো বিএনপি। বিএনপির কোনো বিপদের সময় অন্যরা পাশে থাকাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার এ রায়ের সঙ্গে আগামী নির্বাচনের সম্পর্ক রয়েছে। তাই, এর মাধ্যমে সরকার আসলে কী করতে চায় এবং খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপিও কী করে সেটা আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। খালেদা জিয়ার সাজা হলে জামায়াত মাঠে নামবে কি নামবে না সেটা নির্ভর করছে বিএনপির ওপর। এক্ষেত্রে জামায়াত আগ বেড়ে কিছুই করবে না।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বরের খালেদা জিয়ার ‘‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’’তে জামায়াত-শিবির মাঠে নামলেও বিএনপি-ছাত্রদল মাঠে নামেনি। এমনকি দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়াকে বিপদে ফেলে আত্মগোপনে চলে গিয়েছিলেন। সেদিন মালিবাগে মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ছাত্রশিবিরের একজন নেতা শহীদ হয়েছেন। তাই, আমরা ২০ দলের শরিক দল হলেও বিষয়টি একান্তই বিএনপির ইস্যু। বিএনপি কোন দিকে যায় সেটা দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।