মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক রাতে ২৪টি পুলিশ পোস্টে ‘রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের’ হামলার ঘটনায় পাঁচ পুলিশসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে রয়টার্স।
শুক্রবার মিয়ানমার সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনের মং তাও এলাকার বিভিন্ন গ্রামে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে সমন্বিত এই হামলার সূচনা হয়।
রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বড় ধরনের এই সমন্বিত হামলার ঘটনায় সঙ্কট নতুন মাত্রা পেল।
মিয়ানমার সরকারের বিবৃতির বরাত দিয়ে মিজিমার খবরে বলা হয়, রোহিঙ্গা গেরিলাদের সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশ পোস্ট ঘিরে ফেলে এই হামলা চালায়। তাতে পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং অন্তত সাতজন হামলাকারী নিহত হন।
ভোর ৩টার দিকে প্রায় দেড়শ হামলাকারী খামারা এলাকায় একটি সেনা ক্যাম্পে ঢোকার চেষ্টা করলেও প্রতিরোধের মুখে পিছিয়ে যায় বলে জানানো হয়েছে সরকারের বিবৃতিতে।
গত অক্টোবরে প্রায় একই ধরনের হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর বড় ধরনের দমন অভিযানে নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে বেসামরিক রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া এবং ধর্ষণের মত অভিযোগ ওঠে।
সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযানের মুখে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান রাখাইন থেকে পালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সে সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয় বলেও জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
বৃহস্পতিবারের হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির কাছে হস্তান্তর করেন।
পরে ইয়াংগুনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নাগরিকত্ব না পাওয়ায় এবং নিদারুণ বৈষম্যের কারণ মুসলমান রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে। তাদের ওপর বলপ্রয়োগের পথ ছেড়ে মিয়ানমার সরকারকে যৌক্তিক সমাধানের পথে আসতে হবে।
সুত্র: বিডিনিউজ
Discussion about this post