ভারতীয় উপমহাদেশে আরও সক্রিয় হচ্ছে আল কায়দা। ২০১৭ সাল নাগাদ জঙ্গি সংগঠনটি কয়েকশ’ সদস্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। সংগঠনটি মূলত আফগানিস্তানে বেশি শক্তিশালী হলেও, বাংলাদেশে এর সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদেরকে এমনটিই বলছেন দেশটির সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী বিশেষজ্ঞরা। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা পিটিআই।
মার্কিন আলোচিত থিংকট্যাংক র্যান্ড কর্পোরেশনের রাজনৈতিক বিজ্ঞানী সেথ জি জোন্স বলেছেন, ‘২০১৭ সালের মধ্যে আল কায়দা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (আইকিউআইএস) কয়েকশ’ সদস্যের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আফগানিস্তানের হেলমান্দ, কান্দাহার, জাবুর, পাকটিকা, গজনি ও নুরিস্তান প্রদেশে সংগঠনটির সেল রয়েছে। আফগানিস্তানে আল কায়দার উপস্থিতি পাঁচ বা দশ বছর আগের চেয়ে প্রায় নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি ও বিস্তৃত।’
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের কাউন্টার-টেরোরিজম ও ইন্টিলিজেন্স বিষয়ক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সাবকমিটির সামনে দেওয়া বক্তব্যে এসব বলেন তিনি। জোনস আরও বলেন, আফগানিস্তানে তালিবানের অগ্রগতি, তালিবান সহ পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালিবান ও লস্কর-ই-ঝংভি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে আল কায়দার সম্পর্ক আংশিকভাবে আল কায়দার এই বিস্তৃতির পেছনে দায়ী।
বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আল কায়দার সদস্যরা বিশেষভাবে সক্রিয়। বেশ কয়েকটি হামলাও পরিচালনা করেছে তারা। পাশাপাশি, আইকিউআইএস নিজেদের সংবাদ মাধ্যম আস-সাহাবের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে।’
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আল কায়দা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য আইকিউআইএস প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। তখন তিনি বলেন, ‘আল কায়দার নতুন শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কায়দা আল-জিহাদ ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট। ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে জিহাদের পতাকা তুলে ধরা ও ইসলামি শাসন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এই নতুন শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’
খবরে বলা হয়, হরকাত-উল-জিহাদ আল-ইসলামী নামে পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাবেক সদস্য আসিম ওমর আইকিউআইএস’র নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পরে তার ডেপুটি আবু জর দায়িত্ব নেন।
জোন্স বলেন, ২০১৫ সালের অক্টোবরে মার্কিন ও আফগান সেনারা আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশে একটি বড় প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালায়। এতে আইকিউআইএস’র শতাধিক সদস্য নিহত হয়।
আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিউটের রিসার্চ ফেলো ক্যাথেরিন জিমারম্যান বলেন, আয়মান আল জাওয়াহিরির ওই ঘোষণার পর ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার উপস্থিতি অবশ্য এখনও দুর্বল। তিনি বলেন, ‘আল কায়দা পাকিস্তান বিভক্ত করেছে নৃগোষ্ঠী বসবাসের ভিত্তিতে। পাস্তুন হলো তাদের খোরাসান শাখার অংশ। এই শাখায় আফগানিস্তান ও ইরান রয়েছে। পাঞ্জাব হলো আইকিউআইএস’র অংশ। এরা ভারতের পাঞ্জাব ও বাংলাদেশ শাখা পরিচালনা করে।’ জিম্যারম্যান আরও বলেন, ‘আইকিউআইএস-এর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের প্রোপাগান্ডা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মানে এটি হতে পারে যে, তারা সংগঠনটিকে পুনরায় জাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।’
সূত্র: মানবজমিন
Discussion about this post