বনানীতে দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনার দিন সাফাত আহমেদ তার বন্ধুদের নিয়ে ফ্রন্ট ডেস্কে অস্ত্র জমা দিয়েই রেইনট্রিতে ঢুকেছিল বলে দাবি করছে হোটেলটির কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, ২৮ মার্চ ঘটনাটি ঘটলেও হোটেলটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় ৯ এপ্রিল। ওইদিন হোটেলের আর্চওয়ে কানেক্টেড না থাকায় আসামিরা মদ নিয়ে হোটেলে ঢুকেছিল কিনা, তা বলছে পারছে না হোটেল কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৩ মে) বেলা সোয়া ১২টার দিকে হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ও ইন্টার্নাল অপারেশন এক্সিকিউটিভ ফারজান আরা রিমি এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এদিন সকালে মানবাধিকার কমিশন ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর হোটেলে অভিযান চালানোর পর তারা এই ব্রিফিং করেন।
ব্রিফিংয়ে ফারজান আরা রিমি বলেন, ‘অভিযানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও মানবাধিকার কমিশন অস্বাভাবিক (আনইউজুয়াল) কিছু পায়নি।’ ঘটনার দিনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেদিন (২৮ মার্চ) অস্ত্র ফ্রন্ট ডেস্কে জমা দিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেছিল সাফাত, সাদমান, নাঈমরা। ফলে ধর্ষণের শিকার দুই তরুণী অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের যে অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা।’
রিমি আরও বলেন, ‘এই হোটেলের প্রতিটি রুম সাউন্ডপ্রুফ। ফলে রুমের মধ্যে কেউ চিৎকার করলেও তো বাইরে থেকে শোনার উপায় নেই।’ ২৮ মার্চ ওই দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও হোটেলটি ৯ এপ্রিল চালু হয়েছে বলে দাবি করেন রিমি ও ফ্র্যাংক ফরগেট।
রিমি আরও বলেন, ‘ওইদিন আমাদের আর্চওয়ে কানেক্টেড ছিল না। ফলে অভিযুক্ত আসামিরা মদ নিয়ে প্রবেশ করেছিল কিনা, সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত না।’
ওই ঘটনার পর হোটেল কর্তৃপক্ষের প্রতি গাফিলতির যে অভিযোগ করেছেন দুই তরুণী, সে সম্পর্কে হোটেলের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে রিমি বলেন, ‘এটা অনেকদিন আগের ঘটনা। এটা আমাদের মেমোরিতে নেই।’
অনেকদিন আগের ঘটনা হলেও এটা তো আলোচিত একটি ঘটনা। এটা হোটেল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে কিনা, সে প্রসঙ্গে রিমি আবরও বলেন, ‘এতদিন আগের ঘটনা আমাদের পক্ষে মনে করা সম্ভব না। তাছাড়া ২৮ দিনের বেশি আমরা ফুটেজ সংরক্ষণ করি না। ফলে ওইদিনের ঘটনা আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব না।’
এর আগে ফ্র্যাংক ফরগেট সাংবাদিকদের জানান, হোটেল রেইনট্রির মদের লাইসেন্স নেই।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন দুই তরুণী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওই দুই তরুণীকে জন্মদিনের দাওয়াত দেয়। এরপর তাদের বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি নামের হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, সেখানে দুই তরুণীকে হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয় বলেও উল্লেখ করা হয় এজাহারে। ধর্ষণ মামলার আসামিরা হলো- সাফাত আহমদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন
Discussion about this post