অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির জন্য এবার সাধারণ মানুষের অভিযোগের তীর খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দিকে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ওবায়দুল কাদের মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে পরিবহন মালিকদের পক্ষে সাফাই গাইছেন বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। আর বিশিষ্টজনেরাও বলছেন, দুর্বলতা থাকার কারণেই সরকার পরিবহন মালিকদের অনৈতিক দাবির কাছে বার বার নতিস্বীকার করছে।
দেশের পরিবহন সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরেই এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাস মালিকরা তাদের ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে। এর সাথে হয়রানি-ভোগান্তিতো আছেই। আইন কানুনের কোনো তোয়াক্কায় করে না পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তাদের স্বার্থে একটু আঘাত লাগলেই ধর্মঘট ডেকে বসে। তাদের কাছে মানুষের কেনো মূল্য নেই। এ যেন সরকারের ভেতরে আরেক সরকার।
ঢাকাসহ সারা দেশের মালিক সমিতির নেতৃত্বে রয়েছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঁঙ্গা ও ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের নেতা খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ। আর দেশের পরিবহন শ্রমিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি হলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। এই মন্ত্রীর পারিবারিক মালিকানায় ঢাকায় কনক পরিবহন নামে বাসও চলে।
এদিকে, ওবায়দুল কাদের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসার পর আজ পর্যন্ত পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদেরকে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে আনতে পারেননি। বিআরটিএ’র বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সামান্য ঘুষ বাণিজ্যের জন্য সাধারণ কর্মচারী ও রাস্তায় সিএনজি চালকদেরকে চড়-থাপ্পর দিয়ে আলোচনায় আসলেও বাস মালিকদের কাছে সব সময়ই নিজের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করছেন।
গত ৪ এপ্রিল মালিক সমিতি সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫ এপ্রিল থেকে যা কার্যকর হয়। ১৫ এপ্রিল বিকেলে এক বৈঠক করে বিআরটিএ জানিয়ে দেয়, মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তারা ঢাকায় পাঁচটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে। অভিযান শুরুর পর অনেক মালিক বাস-মিনিবাস চালানো বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি তাঁরা ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিয়ে সিটিং সার্ভিসের ভাড়াও আদায় করছেন। চার দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের কাছে বাস-মিনিবাসে মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি উল্লেখ করে নিজের অসহায়ত্বের কথাই জানান।
তিনি বলেন, কেউ নানা অজুহাতে যদি গাড়ি না চালায়, আমরা কি আমাদের দেশের বাস্তবতায় জোর করে গাড়ি নামাতে পারব? আর গাড়ির সঙ্গে যারা জড়িত, তারা খুব সামান্য মানুষ না, তারা অনেকেই খুব প্রভাবশালী।
ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সব জায়গায় চলছে কঠোর সমালোচনা। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- পরিবহন মালিকরা কি সরকারের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান? আবার অনেকেই বলছে, পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে সেতুমন্ত্রী তাদের পক্ষে কথা বলছেন।
Discussion about this post