তিন সংস্করণের ক্রিকেটের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে পিছিয়ে টি-টোয়েন্টিতে। ২০ ওভারের ক্রিকেটে উন্নতি করতে তরুণদের নিয়ে দল গড়তে আগ্রহী বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে টি-টোয়েন্টিতে সিনিয়র খেলোয়াড়দের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বোর্ড সভাপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কলম্বোতে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে এ নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজনা!
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবশ্য হাথুরুসিংহের চিঠির বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তিনি বলেছেন, ‘এমন কোনও চিঠির কথা আমি শুনিনি। ২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাফল্য পেতেই নেতৃত্বে মাশরাফিকে পরিবর্তন করার ভাবছিলাম আমরা।’
একটি সূত্রে জানা গেছে, মাশরাফি এবং দলের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তারা চাইছিল, নতুন নেতৃত্বের পাশাপাশি দলে কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড় সুযোগ পাক। মাশরাফি অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে যেতেন। ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের অভিমত, কিছুটা চাপে পড়েই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক।
যদিও মাশরাফি মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন অন্য কথা। তার মন্তব্য, ‘তরুণদের দলে সুযোগ করে দিতেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার দারুণ সম্ভাবনা আছে। আমি সরে গেলে রুবেল কিংবা অন্য কেউ খেলার সুযোগ পাবে। সব কিছু মিলিয়েই আমার এই সিদ্ধান্ত।’
তার টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্তে ক্রিকেট-মহলে হৈচৈ পড়ে গেলেও মাশরাফি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছিলেন ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির সঙ্গে। নাজমুল হাসানও অধিনায়কত্ব বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন তার সঙ্গে। তবে এটা পরিষ্কার যে ভবিষ্যতের স্বার্থেই মাশরাফি টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিসিবি সভাপতি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তখন পর্যন্ত মাশরাফিকে পাওয়া যাবে না। সে হয়তো আগামী এক-দেড় বছর খেলবে। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের সময় অধিনায়ক পরিবর্তন হবেই।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল তিন সংস্করণে তিনজন অধিনায়ক থাকবে। আর প্রত্যেকটি সংস্করণে ৪-৫ জন করে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান থাকবে।’
নাজমুল হাসানের মতে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অধিনায়ক হিসেবে নতুন কাউকে পেলে খেলোয়াড়দের জন্য সুবিধাই হবে ‘ওই সময় মাশরাফি নাও খেলতে পারে। তখন হঠাৎ করে একজন অধিনায়ক নিয়োগ দেওয়া কঠিন। আমরা চাই যেই অধিনায়ক হোক, সে যেন এক বছর দলটাকে গোছানোর সুযোগ পায়। হঠাৎ বিশ্বকাপের আগে দল ঘোষণা করলে তার জন্য সমস্যা হতে পারে।’
২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে এখন থেকেই ভাবা শুরু করেছে বিসিবি। এই সংস্করণে বাংলাদেশ এমনিতে ভালো দল নয়। আগামী বিশ্বকাপে ভালো করার লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হিসেবে মাশরাফিকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর কথা ভাবছিল বিসিবি। কিন্তু মাশরাফি নিজেই সরে দাঁড়ালেন টি-টোয়েন্টি থেকে।
বিসিবি সভাপতি এখন তাকিয়ে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দিকে। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘২০১৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য আমরা দুই-একজন নতুন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তা করেছি। যদি প্রতিভাবান খেলোয়াড় পাই, তাদের দলে যোগ করব। ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়ে কাউকে বিচার করা সম্ভব নয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করলেও আন্তর্জাতিক লেভেলে কি করে সেটা দেখার বিষয় থাকে। আমাদের টেস্টে ও ওয়ানডেতে পরীক্ষা করার সুযোগ নাই। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে আমাদের ওপর কোনও চাপ নাই। এখানেই একমাত্র খেলোয়াড়দের পরীক্ষা করা সম্ভব।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
Discussion about this post