জঙ্গিবাদ কেন নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না? কারণ শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো বিশ্বরাজনীতির স্বার্থে জঙ্গিবাদকে সচল রাখছে। এক দেশের জঙ্গিবাদের মূল পৃষ্টপোষক অন্য দেশের গোয়ান্দা সংস্থাগুলো। পাকিস্তানের গোয়ান্দা সংস্থাগুলো ভারতে জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষকতার সুযোগ হাত ছাড়া করে না। আবার পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিদের “অস্ত্র থেকে অর্থ” সব দিয়ে থাকে। আসাদকে সরাতে সিরিয়ায় তো জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ পর্যন্ত দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো। পশ্চিমারা রাশিয়াকে কন্টেইন করতে আসাদকে সরাতে চায়, অবশ্যই, সিরিয়ায় সৌদি-কাতারের স্বার্থ শিয়া ইরানকে কন্টেইন করা। তুরষ্কের স্বার্থ কুর্দিদের দমন করা ও সিরিয়ান মুসলিম ব্রাদারহোডকে ক্ষমতায় নেওয়া। সৌদি-কাতার ও তুরষ্ক কেউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নয়।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প আইএস সৃষ্টির জন্য ওবামাকে দায়ী করেছিল, এই অভিযোগ মিথ্যা নয়। সিরিয়া ও ইরাকের সব জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সৌদি, কাতার, তুরষ্ক, যুক্তরাষ্ট্র নিজ নিজ স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এতে জঙ্গিরাও অস্ত্রশস্ত্র পেয়েছে যা দিয়ে তারা ইসলামের দুশমন আখ্যা দিয়ে মুসলিমদেরও হত্যা করছে। আবার এই জঙ্গিবাদকে দমাতে বিমান হামলা করে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে জঙ্গিবাদের পৃষ্টপোষকরাই। মাঝে সাধারণ নাগরিকরাই জান-মাল সব হারাচ্ছে।
একসময় সমাজবাদী সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান আগ্রাসন করলে তাদের বিরুদ্ধে তালেবানদের সাহায্য করেছিল পুঁজিবাদী যুক্তরাষ্ট্র। আর এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তালেবানদের সাহায্য করছে রাশিয়া। এই হল জঙ্গিবাদের রাজনীতি।
যদি দেখা যায় যে, শেখ হাসিনা ভারত সফর করে আসার পর জঙ্গি অভিযান বিশ্রামে গেছে তাহলে বুঝতে হবে ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তির সমালোচনা আড়াল করতে ঘটা করে জঙ্গি নিধন শুরু করা হয়েছে।
বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের অন্যতম পৃষ্টপোষক হল ‘র’। তাই বাংলাদেশের জঙ্গিরা ভারতে নিরাপদে ঘুরে বেড়ায়। ভারতের সীমান্ত ব্যবহার করতে না পারলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ সম্প্রসারণ সম্ভব নয়। মনে রাখা দরকার ভারত নিজ স্বার্থে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর অস্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চায় যাতে করে বাংলাদেশের ব্যাপারে নাক গলানো সহজ হয়। দূর্বল শেখ হাসিনা সরকারকে ব্যবহার করে ভারত ট্রানজিট নিয়ে নিল, রামপাল খাওয়ায় দিল, সামনে বাংলাদেশকে মেরুদন্ডহীন করতে সামরিক চুক্তির চেষ্টা করছে। ভারতই একমাত্র বিদেশী রাষ্ট্র যে ৫ জানুয়ারীর ভোটারবিহীন নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে।
লেখক : ব্লগার আব্দুল্লাহ আল রাহাত
Discussion about this post