আন্যালাইসিস বিডি ডেস্ক:
আবারো আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনার শিল্প উপদষ্টো, শেয়ার বাজার লুটকারী ও দেশের মানুষের কাছে দরবেশ নামে পরিচিত সালমান এফ রহমান। এই দরবেশ হল হাসিনার টাকা কামাইয়ের মেশিন। কোন কোন থেকে কিভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করা যায় সেই নিয়ম পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে শিক্ষা দেয় এই দরবেশ। শেয়ার বাজার লুটের পর এই দরবেশকে ব্যাংকিং সেক্টরের দায়িত্ব দিয়েছে হাসিনা। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানির নামে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোনের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে দরবেশ বাবা।
সর্বশেষ কথিত লোনের নামে জনতা ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। যদিও বেক্সিমকো গ্রæপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এই লোন নিয়েছে, আসলে এই টাকা নিয়ে দরবেশ শেখ হাসিনাকে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এই ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। হিসাব অনুযায়ী, এর মাধ্যমে তারা কেবল একটি গ্রুপকেই ব্যাংকের মূলধনের ৯৪৯.৭৮ শতাংশ ঋণ সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু কোনো একক গ্রাহককে মূলধনের ২৫ শতাংশের (ফান্ডেড ও ননফান্ডেড) বেশি ঋণ দেওয়ার নিয়ম নেই। একাধিকবার গ্রুপের সার্বিক তথ্য চেয়ে চিঠি দিলেও তা পরিপালন করেনি জনতা ব্যাংক। বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে তথ্য গোপন করেছে ব্যাংকটি। এরপর নতুন করে আরও ৪৭৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ঋণের আবেদন করেছে বেক্সিমকো। এর সূত্র ধরে বিষয়টি আলোচনায় চলে আসে। কেননা এত বড় সিদ্ধান্ত ব্যাংকের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে জনতা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জুলাই জনতা ব্যাংকের ৭৭৮তম পর্ষদ সভায় বেক্সিমকো গ্রুপের ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ বিবেচনায় এই সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কোনো গ্রাহককে বিশেষভাবে একক গ্রাহক ঋণসীমা এবং ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতির বিধান রয়েছে। প্রচলিত নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলেও জনতা ব্যাংককে এই ঋণের বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সালমান এফ রহমান দীর্ঘদিন ধরেই এমন কাজ করে আসছে। এমনকি ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে কিভাবে ঋণ নিতে হয় সেটা ব্যবসায়ীরা আগে জানতো না। সালমান এফ রহমানই মূলত এই পদ্ধতির আবিস্কারক। এমন কাগজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে এক ব্যাংকের পরিচালকরা অন্য ব্যাংক থেকে লোনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর এসব লোনের বড় অংশই যাচ্ছে শেখ হাসিনার কাছে।
বাংলাদেশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে এমন কাগজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ১০০০ কোটি টাকা লোন নিয়েছিল সালমান এফ রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কোম্পানির নাম থাকলেও কোনো পরিচালকের নাম ছিল না সেই কাগজে। কোম্পানি ছিল মালিকবিহীন। আর ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন দরবেশ সালমান রহমান। ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড মিটিংয়ে সালমান এফ রহমানই এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ১০০০ কোটি টাকা লোন ছাড় দিতে বলেছিল। আর এই টাকা নিয়ে নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে দিয়েছিল দরবেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমতা যে তাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে সেটা তারা পরিষ্কার বুঝতে পারছে। এখন তারা শেষ মুহূর্তের লুটপাটে ব্যস্ত। এই ২২ হাজার কোটি টাকাও এই লুটেরই অংশ। আর সবই হচ্ছে শেখ হাসিনার নির্দেশে।
Discussion about this post