অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:-
সরকারের বিভিন্ন সংস্থার যে কয়জন চরম দুর্নীতিবাজ, বিতর্কিত ও সমালোচিত ব্যক্তি আছেন তার মধ্যে ঢাকা ওয়াশার এমডি তাকসিম এ খান হল অন্যতম। লক্ষণীয় বিষয় হল-বিগত ১৩ বছরে কোনো সমালোচনা, বিতর্ক ও অভিযোগই তাকে টলাতে পারেনি। বরং তিনি স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন এবং দিন দিন তার প্রমোশন হচ্ছে। প্রতিবছরই বাড়ছে তার বেতন-ভাতা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ১ বছরে তাকসিম এ খান ঢাকা ওয়াসাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। ঢাকা ওয়াসা থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা শুধু তিনি নিজেই লুটপাট করছেন না, তার সাঙ্গ পাঙ্গরাও লুটপাটে জড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসার নিম্ন মানের পানির কথাতো আর বলার দরকার নাই। ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকাতেই পানির মান খারাপ। অনেক জায়গায় মানুষ ওয়াসার পানি ফুটিয়েও পান করতে পারে না। এসব নিয়ে অভিযোগ দিতে দিতে ঢাকাবাসী এখন ত্যক্ত বিরক্ত।
বিগত কয়েক বছর ধরেই ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের এসব অভিযোগকে কোনো আমলে নিচ্ছে না। বর্তমানে ওয়াসার এমডি তাকসিমকে প্রতি মাসে ৬ লাখ টাকা বেতন দেয়া হয়। এছাড়া অন্যান্য ভাতাতো আছেই। দেশের সর্বোচ্চ আদালতও ওয়াসার এমডির কর্মকান্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তারপরও সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে বার বার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছে। সর্বশেষ গত বুধবার ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় সরকার বিভাগে।
ওয়াসার চেয়ারম্যান অভিযোগে লিখেছেন, ওয়াসাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন তাকসিম।
বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় ওয়াসা পরিচালনা করছেন তাকসিম। ‘তার (তাকসিম) অনিয়ম ও দুঃশাসনের তালিকা এত দীর্ঘ যে তা এখানে লেখা সম্ভব নয়। ‘তাকসিম নিজের ইচ্ছেমতো ওয়াসা চালান এবং ঢাকা ওয়াসার অভ্যন্তরীণ অবস্থা খুবই খারাপ। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের তিনি বরখাস্ত করেছেন। অতীতে এরকম শত শত ঘটনা ঘটেছে। তাই চাকরিচ্যুত হওয়ার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় না। একটি সরকারি সংস্থা এভাবে চলতে পারে না। বোর্ড ও বোর্ডের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে ঢাকা ওয়াসা পরিচালিত হচ্ছে।
ওয়াসা চেয়ারম্যানের এই অভিযোগ করার পর তাকসিম এ খানের বিষয়টি আবার নতুন করে আলোচনায় এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক, বিশিষ্টজন ও সচেতন মানুষ এ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে এত অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পরও সরকার তাকে বার বার চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছে কেন? নিয়োগের সাথে সরকার তাকে আমেরিকা বসে অফিস করার সুযোগ দিচ্ছে কেন? আমেরিকায় ১৪টি বাড়ি কেনার অভিযোগ উঠার পরও সরকার এগুলো তদন্ত করছে না কেন?
তাদের মতে, তাকসিম এ খানের খুটির জোর সরাসরি গণভবন। শেখ হাসিনার ইশারাতেই তাকে বার বার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও এত অবাধ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তাকসিম এ খানের লুটপাটের টাকা শুধু আমেরিকা যাচ্ছে না, টাকার ভাগ গণভবনেও যাচ্ছে। এজন্যই তাকসিম এ খান এখন পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে বহাল তবিয়তে আছেন।
Discussion about this post