অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গ্যাস দাম বাড়ানোর জন্য আবারো তোড়জোড় করছে সরকার। ইতিমধ্যে ১১৭ শতাংশ অতিরিক্ত দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারের এই গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। আর সামনে এসেছে প্রতিমাসে গ্যাস চুরির বিশাল অংকের এই টাকা যাচ্ছে কার পকেটে? সরকার গ্যাস চুরি বন্ধ না করে বার বার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে কেন?
গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে পেট্রোবাংলা বলেছে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম বেড়ে গেছে। স্পর্ট মার্কেট থেকে চড়া দরে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। তাদের তথ্যে দেখা গেছে গত অর্থবছরে গড়ে দৈনিক ৯৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হয়েছে। সে হিসেবে স্পর্ট মার্কেট থেকে আমদানি করা গ্যাসের পরিমাণ মাত্র ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্যদিকে গত জুলাই-ডিসেম্বর সিস্টেম লস হয়েছে সাড়ে ৮ শতাংশ। দৈনিক সিস্টেম লসের পরিমাণ ২৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট। আমদানি করা গ্যাসের চেয়ে কথিত সিস্টেম লসের নামে গ্যাস চুরি হচ্ছে ৫ শতাংশ বেশি।
মাসে প্রায় ৬ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চুরি হচ্ছে যার দাম (আমদানি মূল্যে) সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। চুরির পুরোটাই সিস্টেম লসের নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন-চুরির পরিমাণ এক-তৃতীয়াংশ কমানো গেলেও স্পর্ট মার্কেট এলএনজি আমদানি করতে হয় না। আর স্পর্ট মার্কেট থেকে গ্যাস আমদানি করতে না হলে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না। মুনাফায় থাকা গ্যাসের ৬টি বিতরণ কোম্পানি দাম না বৃদ্ধি করে বিদ্যমান বিতরণ চার্জ বাতিল করলেও চলে।
জানা গেছে, গ্যাসের আদর্শ সিস্টেম লস হচ্ছে ২ শতাংশের নিচে। বিশ্বের কোথাও ২ শতাংশের উপরে সিস্টেম লস নেই। অথচ বাংলাদেশে সেটা সাড়ে ৮ শতাংশ। অর্থাৎ কথিথ সিস্টেম লসের নামে প্রতিদিন সাড়ে ১০ হাজার টাকার গ্যাস চুরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন-প্রতি বছর গ্যাস চুরির হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষমতাসীনদের পকেটে যাচ্ছে। এটাকে তারা সিস্টেম লস দেখিয়ে গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। আর গ্যাস চুরির টাকার ভাগ যদি সরকার না পায় তাহলে গ্যাস চুরি বন্ধ করছে না কেন সরকার? এটা এখন স্পষ্ট যে, গ্যাস খাত এখন সরকারের লোটপাটের অন্যতম খাতে পরিণত হয়েছে।
Discussion about this post