অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশের ওলামায়ে কেরাম ও সরকারের মধ্যে আবার সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবেই আলেম-ওলামা ও ইসলাম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত। যার কারণে তারা দেশের হকপন্থী আলেম ওলামাকে কখনো পছন্দ করেনা এবং তাদেরকে সম্মানও করে না।
আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে অধিকাংশ মুসলমান হলেও দলটি চর্চা করে ভারতের কৃষ্টি-কালচার। যা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী। মূলত ইসলাম বিরোধী সংস্কৃতি মুসলমানদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার কারণেই দেশের আলেম-ওলামাদের সাথে আওয়ামী লীগের বারবার সংঘাত-সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।
৭৫’র পর ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। ৯৬ সালের নির্বাচনের আগে অতীতের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে জনগণের ভোট নিয়েছিল শেখ হাসিনা। মাথায় হিজাব আর হাতে তাসবিহ পরে নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত হয়ে মানুষের কাছে ক্ষমা ও ভোট চাইতেন।
শেখ হাসিনার মাথায় হিজাব ও হাতে তাসবীহ দেখে এদেশের মানুষ মনে করছিল যে, আওয়ামী লীগ ভাল হয়ে গেছে। কিন্তু কয়লা ধুইলে কি আর ময়লা চলে যায়? আওয়ামী লীগও এক প্রকার কয়লার মতো। ওদেও অভ্যাস কখনো পরিবর্তন হবে না।
ক্ষমতায় এসেই সেই পুরনো চেহারা জাতির সামনে উম্মোচন করে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ২০০০সালে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান ফতোয়াকে নিষিদ্ধ করেছিল।
এই ফতোয়া নিষিদ্ধের প্রতিবাদে তখন সারাদেশে আলেম সমাজ ক্ষুব্দ হয়ে রাস্তায় নেমে এসে। সেই সময় শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক ও মুফতি আমিনীসহ অসংখ্যা আলেম ওলামাকে গ্রেফতার জেলে ভরে তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালায় শেখ হাসিনা।
আর এদেশের মুসলমানরা জন্মগতভাবেই ইসলাম ও আলেম ওলামাদেরকে ভালবাসেন। সেই ভালবাসা থেকেই তখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে আসে এদেশের তৌহিদী জনতা। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নৌকাকে পানির নিচে ডুবিয়ে তারা ঘরে ফিরেছিল।
ইদানিং দেখা গেছে, শেখ হাসিনা তার আগের পথ ধরেই হাটছেন। কথিত ভাস্কর্যের নামে সারাদেশের রাস্তার মোড়ে মোড়ে শেখ মুজিবের মূর্তি বানাচ্ছে। এক সময়ের মসজিদের শহর এখন মূর্তির শহরে পরিণত হয়েছে। ঢাকা শহরকে মনে হবে ভারতের কোনো শহর।
লক্ষণীয় বিষয় হলো-আলেম সমাজের পক্ষ থেকে এই মূর্তি নির্মাণের বাধা দেয়ার কারণে শেখ হাসিনা আবারও দেশের আলেম ওলামাদের উপর চড়াও হচ্ছে। শেখ হাসিনার এই রোষানলের প্রথম শিকার হচ্ছেন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের ছেলে মাওলানা মামুনুল হক।
দেখা গেছে, ইতিমধ্যে প্রশাসন দেশের বিভিন্ন স্থানে মামুনুল হকের বেশ কিছু মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছে। গত পরশুদিনও নড়াইলে যাওয়ার পথে পদ্মা নদীর মাঝখান থেকে তাকে ফেরত পাঠিয়েছে হাসিনার পুলিশ লীগের কর্মীরা।
গত সপ্তাহে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান নওফেল বলেছেন, তিনি নাকি আলেমদের ঘাড় মটকে দেবেন। আলেমদেরকে তিনি ভাড়াটিয়া হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন।
তার এই বক্তব্যের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা। এমনকি কিছুদিন ধরে আলেমদের সুরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন সাধারণ মানুষও। রাজনীতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন-এই ইস্যুতে সরকার যদি আলেমদের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে পরিণাম আগের মতো হতে পারে। সরকার এমন এক সংকটে পড়তে পারে, যেটা থেকে বেরিয়ে আসার আর পথ পাবে না।