অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে চুরমার করার পর এবার নির্বাচনী আইনগুলোকেও ভাঙ্গার কাজে হাত দিয়েছেন শেখ হাসিনার একান্ত অনুগত ও আস্থাভাজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা। এখন থেকে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য আর নির্বাচন কমিশনকে বলতে হবে না। শেখ হাসিনা নিজেই এটা করে করতে পারবেন। সেই ব্যবস্থাই করে দিচ্ছেন নুরুল হুদা।
একটা বিশেষ টার্গেট নিয়েই ৯৬ সালে বিএনপি সরকারকে উৎখাতে স্থাপিন জনতার মঞ্চের সেই নায়ক ও বঙ্গবন্ধু গবেষণা সেলের সাবেক সদস্য নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। পদ পেয়ে নুরুল হুদাও অক্ষরে অক্ষরে শেখ হাসিনার সব প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছে।
দেখা গেছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ও ক্ষমতায় ধরে রাখতে যা যা করা দরকার নুরুল হুদা সবই করে যাচ্ছে। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে একেবারে শেষ করে ফেলছেন। আর দেশে এখন বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনের নামে যা হচ্ছে এগুলো লোক দেখানো তামাশা। সংসদ থেকে শুরু করে গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের লোকজনকে বসানোর ব্যবস্থা করেছে সিইসি নুরুল হুদা। যার কারণে, মানুষ এখন আর ভোট দিতে কেন্দ্রে যায় না।
এত কিছু করে মনে শান্তি পাচ্ছে না নুরুল হুদা। এবার নিজের ক্ষমতাটাই শেখ হাসিনাকে দেয়ার ব্যবস্থা করছে।
দেশের নির্বাচনী আইনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ৯-ই ধারার ১ ও ২ উপধারা অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে দেখা এবং তদন্তে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিলের সরাসরি ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যাস্ত ছিল। এ ধারাটি সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে আরপিওতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
কিন্তু, নুরুল হুদা সেই ধারাটি বিলোপ করে খসড়া আইন প্রণোয়ন করেছে। এই আইন পাস হলে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের দরকার হবে না। সরকারই বাতিল করে দিতে পারবে। নির্বাচন কমিশন তখন শুধু মেরুদন্ডহীন প্রাণীর মতো চেয়ে চেয়ে দেখবে।
সমালোচকরা বলছেন, রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে ই আইন তৈরি হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। এই আইন পাস হলে নুরুল হুদা হিজড়ায় পরিণত হবে। আর নির্বাচন কমিশন হবে হিজড়া কমিশন। দেশের হিজড়াদের যেমন কিছু করার ক্ষমতা নেই, নুরুল হুদারও কিছু করার ক্ষমতা থাকবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলছেন, এমন আইন গণতন্ত্রের পরিপন্থী এবং তা গ্রহণযোগ্য হবে না। “এই নিবন্ধন আইন গণতন্ত্রকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ন্যূনতম যতটুকু সুযোগ, সেটাও নষ্ট করবে। অত্যন্ত দূর্ভাগ্যের কথা যে এই নির্বাচন কমিশন তারা একটা লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে যে কি করে বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করবে। এটা করতে গিয়ে তারা আজ কফিনে শেষ পেরেকটুকু মারছে।”
বিএনপি নেতা মি. আলমগীর আরও বলেছেন, “এই নিবন্ধন আইনের মধ্যে তারা যে শর্তগুলো জুড়ে দিয়েছে এবং নতুন করে তারা যেগুলো করছে, এগুলো কোনভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষে হতে পারে না। তারা এখানে কিছু শব্দ ইংরেজি থেকে বাংলা করছে এবং বাংলা শব্দকেও পরিবর্তন করছে, যেগুলো কমনভাবে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোও তারা পরিবর্তন করছে।”