অ্যানালাইসিস ডিবি ডেস্ক
অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং বিরোধী দলগুলোকে দমন-পীড়নের জন্য বিগত ১২ বছর ধরে পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে শেখ হাসিনা। পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব রাষ্ট্রের নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা দেয়া হলেও ক্ষমতাসীনরা এই বাহিনীকে দলীয় কর্মী ও লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। সিনহা ইস্যুতে সেই পুলিশই বিপাকে ফেলেছে নেত্রীকে। এ যেন দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষার এক প্রতিচ্ছবি। অনেকেই হাস্যরস করে বলছেন প্রধানমন্ত্রী পুলিশ নামের যে সাপ পুষছিল সেই সাপই এখন কামড় দিচ্ছে তাকে।
মানুষের নিরাপত্তা দেয়া বাদ দিয়ে গুম, খুন, অপহরণ, দমন-নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ সদস্যরা। আর কথিত ক্রস ফায়ারের নামে বিরোধী দলের জনপ্রিয় নেতাকর্মীদেরকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে। পুলিশ নামের এই খুনিরা এখন সেনা বাহিনীর লোকদেরকেও হত্যা শুরু করছে।
গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদকে একেবারেই ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ সদস্যরা। তাকে হত্যার পর আবার কক্সবাজারের এসপি মাসুদ, ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল লিয়াকত অস্ত্র ও মাদকের নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু অবশেষে সেই নাটক ভেস্তে গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যান্টনমেন্ট। সেনা অফিসার ও সাধারণ সৈনিকরা এটাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। বিশেষ করে সিনহা হত্যাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে সেনাপ্রধান আজিজের বক্তব্যের পর সেনা অফিসাররা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। আজিজকে তারা সরকারের দালাল বলেও আখ্যা দিচ্ছে।
জানা গেছে, সেনাবাহিনীর ক্ষোভের কথা জানার পরই শেখ হাসিনা নিহত সিনহার মাকে ফোন করে শান্তনা দিয়েছিলেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সরকার জানতে পেরেছে সেনাপ্রধান আজিজ এখন বাহিনীতে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। এনিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে সরকারও। শেখ হাসিনা এখন তীক্ষ্ণ নজর রাখছে উত্তরপাড়ায়।
আর গতকাল শুক্রবার আওয়মাী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রকাশ্যেই বলেছেন-সিনহার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ সরকার হটানোর স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু সাহস করে আর কারও নাম নিতে পারেননি কাদের।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের একাধিক ব্যক্তি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তারা সেনাবাহিনীকে বুঝানোর চেষ্টা করছে যে, আপনারা যেভাবে চাবেন সেইভাবেই সরকার জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।