অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে সারাদেশে এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত ১০ জানুয়ারি কথিত ক্ষণগনণা শুরুর পর থেকেই সারাদেশে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে মুজিববর্ষ পালনে বাধ্য করছে। এমনকি মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও মুজিবের ছবি টানাতে বাধ্য করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
আরেকটি ভয়ঙ্কর বিষয় হলো ক্ষমতাসীনদের গণমাধ্যমগুলো যারা মুজিববর্ষ পালনের আয়োজন করছে না তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে উস্কিয়ে দিচ্ছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাট্রিবিউন শনিবার ‘মুজিববর্ষে কোনও আয়োজন নেই কওমি মাদ্রাসায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পুরো প্রতিবেদনটিই কওমী মাদরাসা ও আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক সংবাদ। এভাবে দালাল গণমাধ্যমগুলো মুজিববর্ষ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারকে উস্কে দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাম গঞ্জেও মানুষের মধ্যে মুজিববর্ষ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে এমপিও ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা খুব বেকাদায় আছে। এরপর চাঁদাবাজিতো আছেই। ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজির কারণে সারাদেশে ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে সারাদেশে একটা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো চরম আতঙ্কের মধ্যে মানুষের মনে এক অফুরন্ত শান্তির পরশ নিয়ে এলো করোনা ভাইরাস। ভাইরাসটি মরণব্যাধী হলেও বাংলাদেশে এ ভাইরাসের আগমের সংবাদ শুনার পর কষ্টের ভেতরও মানুষের চেহারায় একটা প্রশান্তির ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ইতিমধ্যে যে মোদিকে নিয়ে সরকারের এতো তোড়জড় ছিলো করোনার আতঙ্কে আসছেন না তিনিও। অন্যদিকে বিদেশিরাও কেউ আসছেননা মুজিবর্ষ পালনে। এদিকে ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠেয় মূল অনুষ্ঠানটি ওই দিন না হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন। এছাড়া করোনা আতঙ্কে স্থগিত করা হয়েছে মুজিববর্ষের ক্রিকেট এবং কনসার্ট।
বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের কারণে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান স্থগিত ঘোষণা করার পর পরই সারাদেশে মানুষের মধ্যে যেন আনন্দের বন্যা বইয়ে যাচ্ছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন করোনায় ভেসে গেল মুজিববর্ষ। কেউ লিখছেন মুজিববর্ষে করোনার ধাক্কা। এটাই হলো আল্লাহর মাইর। কেউ কেউ আবার অশালীন ভাষায় শেখ হাসিনাকে গালাগালাজ করছেন। মানুষের এসব প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান স্থগিত বাতিল হওয়ায় মানুষ আনন্দে করোনার কথাই ভুলে গেছে।