অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের মদ, জুয়া, নারী নিয়ে ফূর্তি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দখল দারিত্বের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান চালাচ্ছে সরকার। এ অভিযান সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। চলমান অভিযানে ইতিমধ্যে যা বেরিয়ে আসছে তা রীতিমত অবাক করার মতো ঘটনা। অনেকেই বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পুরো ঢাকা শহরকে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির মাধ্যমে তারা হাজার হাজার কোটি হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে।
গ্রেফতারকৃত যুবলীগের দুই নেতা খালেদ ও শামীম জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য দিয়েছে তা খুবই ভয়াবহ। প্রতি মাসে তারা মোটা অংকের টাকা দিতেন মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটকে। এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেসব তথ্য পাচ্ছে সবগুলোতেই নিয়ন্ত্রক হিসেবে নাম আসছে সম্রাটের। অপরাধের এই স্বর্গরাজ্য বিগত ১১ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাক শহরে যে কয়টা সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে সবগুলোই দেখাশুনা করতেন এই ক্যাসিনো সম্রাট। সকল অপকর্মের যিনি মূলহোতা সেই ক্যাসিনো সম্রাট হলেও সরকার এখনো গ্রেফতার করেতে পারেনি। পুলিশ ও নেতাকর্মীর পাহারায় সম্রাট তার কাকরাইলের অফিসে অবস্থান করছেন।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন অপরাধ জগতের সম্রাটকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন গ্রেফতার করছেন না? ক্যাসিনো সম্রাট কি শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি ক্ষমতাশালী?
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ক্যাসিনো সম্রাটের ওপর আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনা অনেক আগে থেকেই ক্ষুব্ধ। মোটা অংকের চাঁদা না দেয়ায় যখন কাকরাইলে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল তখনও এই সম্রাটের ওপর শেখ হাসিনা প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। জানা গেছে, এই সম্রাট শুধু যুবলীগ নয়, আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকেও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রি-এমপি প্রতি মাসে সম্রাটের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে থাকেন। তাই, চলমান অভিযানেও যুবলীগ নয়, আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও সম্রাটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যার কারণে ক্যাসিনো সম্রাটকে এখনো গ্রেফতার করতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, এই যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার না করায় আওয়ামী লীগেরও একটি অংশ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, জুয়া, মদ আর দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালালেও শেখ হাসিনা সম্রাটের কাছে নতিস্বীকার করেছেন। তা না হলে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের এই শীর্ষ চাঁদাবাজ কি করে এমন অভিযানের মধ্যেও নেতাকর্মী নিয়ে কাকরাইলে অবস্থান করতে পারে?