আগামী ৭ মার্চ শপথ নেবেন একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ও মোকাব্বির খান। তবে সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এককভাবে শপথ নিতে যাওয়ায় এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে ঐক্যফ্রন্ট।
সুলতান মনসুর গতকাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমি ৭ মার্চ শপথ নেওয়ার জন্য সংসদ সচিবালয়ে চিঠি দিয়েছি। ওইদিন শপথ নেবো। শত প্রতিকূলতার মধ্যে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, তাদের ভোটের সেই মর্যাদা দিতে আমি শপথ নিচ্ছি।
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেট-২ আসন থেকে ‘উদীয়মান সূর্য’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোকাব্বির খান। মোকাব্বির খান বলেছেন, আমি এবং সুলতান মনসুর একসঙ্গে শপথ নেবো। আমরা চিঠি দিয়েছি। এখন স্পিকার কবে সময় দেন, তার ওপর শপথ নেওয়া নির্ভর করবে।
গণফোরাম থেকে শপথ নেওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, আমার দল শপথ নেওয়ার ব্যাপারে সব সময় ইতিবাচক।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট ডাকাতির অভিযোগে বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্ট ঘোষণা দিয়েছে তাদের নির্বাচিত প্রার্থীরা শপথ নিবে না। কিন্তু এই দুইজন দল ও জোটের সঙ্গে বেঈমানী করে শপথের জন্য স্পিকারকে চিঠি দিলো।
এই দুই সদস্যের শপথ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেছেন, তারা কবে চিঠি দিয়েছেন, তা আমি জানি না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তো আমার জানা উচিত।
আমাদের এই রকম কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি যে তারা এককভাবে শপথ নেবেন। আমরা যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, শপথ নিতে চিঠি দিতে হলে ঐক্যফ্রন্টের সবাই একসঙ্গে দেবো এবং একসঙ্গে যাবো আন্দোলনের অংশ হিসেবে। তিনি আরও বলেন, এখন কেউ যদি সিঙ্গেলভাবে শপথ নেওয়ার জন্য চিঠি দেয়, তাহলে আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আইন ও সংবিধান অনুযায়ী সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সংসদে যোগ দিলে কী ঘটবে? এ বিষয়ে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো সাংসদ নির্বাচনের পর সাংসদ পদে থাকার অযোগ্য হবেন কি না, কিংবা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনো সাংসদের আসন শূন্য হবে কি না—এ সম্পর্কিত কোনো বিতর্ক দেখা দিলে বিষয়টি শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশনের নিকট পাঠানো হবে এবং এ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি উক্ত দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তবে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।
তথ্যসূত্র: নয়াদিগন্ত ও প্রথম আলো