অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী দেশের সর্বত্র গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এমনকি গুম ও হত্যার শিকারও হচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। সম্প্রতি যশোর জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও একটি ইউনিয়নের চার বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবু বকর ঢাকায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে এসে হোটেল থেকে গুম ও হত্যার শিকার হন। পরবর্তীতে তার লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসে উঠে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র মাস খানিকের বাকী ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, রিটার্নিং কর্মকর্তা , আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত সকলের সাথে মতবিনিময় করে নির্বাচনকালীন সময়ে তাদের করণীয় সম্পর্কে ইতোমধ্যে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
নির্দেশনা মোতাবেক আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী ইসির নির্দেশেই কেবল গ্রেফতার করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তাদের বাইরে কোন গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। এর আগে নির্বাচনে সকল দলের লেভেল প্লেয়িং নিশ্চিত করার কথাও তিনি বলেছিলেন। রাজনৈতিক ভাবে প্রশাসনের দায়ের করা গায়েবী মামলায় কোন বিরোধী রাজনীতিককে গ্রেফতার কিংবা হয়রানি করা হবেনা বলেও ইসি নিশ্চিত করেছিলেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিশ দলীয় জোটের নেতারাও ইসির সাথে সাক্ষাৎ করে গায়েবী মামলা ও আসামীর তালিকা হস্তান্তর করেছেন। এমনকি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মামলায় জড়ানো ও গ্রেফতারের বিষয়ে ইসিকে অবহিত করেছে সরকার বিরোধী এই রাজনৈতিক জোটটি।
সারাদেশের ন্যায় রাজধানীতেও পুলিশ বেপরোয়াভাবে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা-১৫ আসনে ২০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁর এই প্রার্থীতার কারণে মিরপুর কাফরুল এলাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে নারীসহ শিশুদের । যা প্রশাসন ও ইসির একপেশে আচরনের প্রতিফলন বলেই জামায়াত নেতারা অভিযোগ করছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়,‘গত কয়েক দিনে এলাকা থেকে জাহানারা বেগম, আব্দুল মুগনী, হালিমা খাতুন, তাসলিমা খন্দকার, তৌফিক হোসেন প্রিন্স, ওয়াহিদুর রহমান তপন ও রফিকুল ইসলাম সহ আরও অজ্ঞাতনামা নারী-পূরুষ সহ অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃতদের পরিবারের দাবি তাদের নামে অতীতে কোন মামলা ছিল না,পুলিশ তাদেরকে অতিউৎসাহী হয়ে গ্রেফতার করে নতুন করে মামলা দিচ্ছে।
এর আগেও পুলিশ অধ্যাপক আনোয়ালরুল করিম ও সেলিম উদ্দীন খলিফা সহ বেশ কিছু বিরোধী দলীয় কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এভাবে প্রতিদিনই ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নয়াপল্টনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায়ও এখানে চার্জ করা হচ্ছে। সারাদেশে গত কয়েকদিনে শতশত বিএনপি জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে চালাছে অভিযান ও হয়রানি করছে। এমনি পরিস্থিতিতে নির্বাচনে বিরোধীরা কতটুকু স্বাধীনভাবে প্রচারণা চালাবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করাও ইসির পক্ষে সম্ভব নয় বলে দাবি করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।