অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে বিগত দশ বছরে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। আর বিগত দশ বছরের দু:শাসনের পর এবারও তারা ক্ষমতা ছাড়বে না এটাই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। তাদের টার্গেট যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। যার কারণে তারা সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে না এমন আশঙ্কা থাকার পরও নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি ও কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোট। দুই জোটের প্রত্যেকটি দলই তাদের দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করেছে।গত দুইদিনে বিএনপির ৩ হাজারের বেশি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। আর স্বতন্ত্রভাবে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ কয়েকজন নিজ নিজ সংসদীয় এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।বলা যায়-যে উৎসব দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কার্যক্রম শুরু করেছিল সেই উৎসব এখন চলে আসছে বিরোধী জোটের আঙ্গিনায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই বিগত দশ বছর ধরে কোনঠাসা হয়ে থাকা বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠছে। আর মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরুর পর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে উভয় জোটের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সারাদেশের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখন নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। কেন্দ্রের নির্দেশ পেলেই তারা নির্বাচনী মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষও মনে করছেন, নির্বাচন কমিশন যদি সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় তাহলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই নির্বাচনী মাঠ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের অনুকূলে চলে যাবে। তাদের মতে, সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। মানুষ প্রতিবাদ করার কিংবা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে না। হামলা, মামলা ও গ্রেফতার হয়রানির ভয়ে মানুষ চুপ করে বসে আছে। শুধু একটু সুযোগের অপেক্ষায় আছে। একটু নিরাপদ মনে করলেই তারা রাস্তায় নেমে আসবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ার পরই আওয়ামী লীগের অনেক হিসাব পাল্টে গেছে। বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীরা যত চাঙ্গা হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তত বাড়ছে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করছেন, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট যদি জনগণের মধ্যে বড় ধরণের প্রভাব বিস্তার করতে পারে তাহলে তাদের দীর্ঘদিনের সাজানো ছক ভেস্তে যেতে পারে। আর নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসবে এমন নির্বাচন কখনো দেবে না আওয়ামী লীগ। তখন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নতুন চিন্তাও করতে পারে।
বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, আওয়ামী লীগ কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে না। আর নির্বাচনী মাঠ যদি বিরোধী জোটের অনুকূলে চলে যায় তাহলে আওয়ামী লীগই নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করবে।
বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ সোমবার রাতে চ্যানেল২৪ এর টকশোতে অংশ নিয়ে বলেছেন, শেখ হাসিনা কখনো তার ঘরে ঢোকার জন্য বিএনপিকে দরজা খুলে দেবেন না। তিনি কখনো এমন সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন না যাতে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে। পরিবেশ পরিস্থিতি আওয়ামী লীগের প্রতিকূলে চলে গেলে তারা নিজেরাই নির্বাচন পণ্ড করে দেবে।