বিএনপি যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তা দিয়ে ফল আসবে না বলে মনে করেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
এসব বাদ দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের জন্য তাদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন বর্তমান সরকারের ব্যপক নির্যাতনের শিকার এই পেশাজীবী নেতা।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদুর রহমান বলেন, “আপনারা এসব ঝেড়ে ফেলে দেন, এসব ভোট-টোট বাদ দেন, এসব আলোচনা বাদ দেন, ইলেকশন কমিশনে গিয়ে ধর্না দেওয়া বাদ দেন।
“আপনারা গণঅভ্যুত্থানের জন্য রাস্তায় নামুন, তাহলে মুক্তি আসবে; অন্যথায় কোনো মুক্তি আসবে না।”
“শুধু বলে যাই-যতদিন বেঁচে আছি, দিল্লির আধিপত্যবাদ এবং শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব ইনশাল্লাহ এবং লড়াইয়ের মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করাই আমার কাম্য। যদি স্বাধীনতা না-ই আাসে তাহলে এই জীবন রাখবার কোনো দরকার নেই বলে আমি মনে করি,” বলেন তিনি।
২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক লেবার পার্টির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘রুখো আগ্রাসন, হটাও দুঃশাসন’ শিরোনামের এই আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মাহমুদুর রহমান।
তার বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- বিএনপি একটি ‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল’ হওয়ায় গণতন্ত্রের সুযোগগুলো নেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।
“সেজন্য আমরা প্রত্যেকটা বিষয়ে মতামত দিচ্ছি, আমরা ২০৩০ সালের ভিশন দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠন কীভাবে করা যাবে তার কথা আমরা বলেছি। সবশেষ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আমরা আমাদের কথাগুলো পরিষ্কারভাবে বলে এসেছি।”
তবে এত সহজে সব কিছু হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ঠিক জায়গায় পৌঁছানোর জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকে একটা ঐক্য গড়ে তুলতে হবে জনতার ঐক্য, একটা জাতীয় ঐক্য যদি গড়ে উঠে গণতন্ত্রের জন্য তাহলেই আমরা সফল হতে পারব।”
দশম সংসদ নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনে বিজয়ের কাছাকাছি গিয়েছিলেন বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, “২০১৪ সালের আগে আমরা জাতীয় ঐক্যের দিকে প্রায় এগিয়ে গিয়েছিলাম। সমস্ত দল ও মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, গ্রামে-গঞ্জে রীতিমতো একটা বিপ্লব হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু আমরা সফল হতে পারিনি এই ফ্যাসিবাদের যে নির্যাতন-নিপীড়ন ঢাকার মধ্যে হয়েছে, সেখানে সফল হতে পারিনি।
“হতে পারিনি বলে যে আর হতে পারব না, তা তো নয়। আমাদের কাজ করতে হবে, লড়াই করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে, আমরা বিএনপিকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছি, অন্যান্যরাও করছেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।”
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সরকারের ভূমিকা ‘নতজানু’ বলেই রাশিয়া ও চীনকে এখনও পক্ষে আনা যায়নি বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যু আজকে আমাদের জন্য সমস্যা বড় সমস্যা হয়ে গেছে। এই ইস্যুতে সরকার সম্পূর্ণভাবে একটা নতজানু ভূমিকা পালন করছে। তারা (সরকার) কোনোভাবেই আজকে এই কথা বলতে পারবে না যে, তারা তাদের সময়োচিত যে পদক্ষেপগুলো নেয়া উচিৎ ছিল, সেগুলো তারা নিয়েছে।
“তারা জাতিসংঘ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশকে এখন পর্যন্ত কনভিন্স করতে পারেনি, যার ফলে রাশিয়া ও চীন এখনও কিন্তু বিরোধিতা করেই চলেছে। অন্যদিকে ভারতও মিয়ানমারের পক্ষে সমর্থন নিয়েছে।”
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এই সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, সহ-সভাপতি ফরিদউদ্দিন আহমেদ, ফারুক আহমেদ, এমদাদুল হক চৌধুরী, মুসলেম উদ্দিন, জহুরুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুদ্দিন পারভেজ, মাহমুদ খান, আনোয়ার হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, জাহিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিডিনিউজ অবলম্বনে
Discussion about this post