অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার হঠাৎ ছুটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে চলছে চরম বিতর্ক। প্রথম থেকেই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অসুস্থতার কারণে প্রধান বিচারপতি ছুটি নিয়েছেন। তবে, সরকারের এ দাবি মানতে রাজি নয় বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধীদলগুলো। তারা বলছেন, সরকার তাকে জোর করে ছুটিতে পাঠিয়েছে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরাও বলছেন সরকার প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে প্রধান বিচারপতিকে ছুটি নিতে বাধ্য করেছে।
এছাড়া প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আদৌ কোনো আবেদন করছেন কিনা এনিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছে।
জনমনে সৃষ্টি হওয়া সন্দেহ দূর করতে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের কাছে করা প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদনটি প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিভিন্ন গণমাধ্যমও প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদনটি স্ক্যান করে হুবহু প্রকাশ করেছে।
এদিকে, রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এনিয়ে আবার নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমগুলো এনিয়ে কোনো প্রশ্ন না তুললেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে কঠোর সমালোচনা। এ আবেদন প্রধান বিচারপতির হাতের লেখা কিনা এনিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে কেউ কেউ। আবার অনেকে বলছেন, এটা কোনোভাবেই প্রধান বিচারপতির নিজ হাতে লেখা আবেদন নয়। আবার আবেদনের নীচের স্বাক্ষর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত আবেদনে দেখা গেছে, একাধিক শব্দ ও বানান ভুল হয়েছে। যেমন-আমি এর জায়গায় লেখা হয়েছে অমি। আর আক্রান্ত এর জায়গায় লেখা হয়েছে অক্রান্ত। এছাড়া শারীরিক শব্দটিকে লেখা হয়েছে ‘শারিরীক’। শব্দটি তিন বার ব্যবহার হয়েছে।
এনিয়ে অনেকেই বলছেন, প্রধান বিচারপতি নিজ হাতে ছুটির আবেদন লিখলে এত ভুল হওয়ার কথা ছিল না। এটা আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কাউকে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে লিখিয়ে প্রধান বিচারপতি থেকে শুধু স্বাক্ষর এনেছেন। হয়তো চাপের মুখে প্রধান বিচারপতি এটা ভাল করে পড়ারও সুযোগ পাননি।
এরপর প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। আবেদনের নীচে দেয়া স্বাক্ষর প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নয় বলেও বলছেন কেউ কেউ।
আর আবেদনের স্বাক্ষরটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের যুক্তিসংগত কিছু কারণও রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি সিনহা সাধারণত ইংরেজিতে স্বাক্ষর করেন। আর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটেও গিয়েও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে দেয়া বাণীতে তার ইংরেজি স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু, রাষ্ট্রপতির কাছে করা আবেদনে রয়েছে বাংলা স্বাক্ষর।
তবে দু একটি যায়গায় প্রধান বিচারপতি বাংলায়ও স্বাক্ষর করেছেন। এরমধ্যে ২০১৫ সালের ১৬ই ডিসেম্বর তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভিজিট করতে গেলে সেখানে ভিজিটরস বুকে বাংলায় স্বাক্ষর করেন। সেই স্বাক্ষরের ছবি একটি অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তার সাথেও এই স্বাক্ষরের কোনো মিল নেই।
Discussion about this post