অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
ছাত্রলীগ নিয়ে নতুন করে আর কিছু বলার নাই। স্বাধীনতার পর থেকে এদেশে যত অন্যায়, অপরাধ ও অপকর্মের জন্ম হয়েছে সবগুলোরই সূচনা হয়েছে ছাত্রলীগ নামের এই সন্ত্রাসী সংগঠনের হাত ধরে। অপরাধ-অপকর্মের সকল সীমাই ছাত্রলীগ অতিক্রম করেছে। খুন, হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, হল দখলসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যেটা ছাত্রলীগ করেনি।
এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসাইনের বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী, ছাত্রলীগ নেতা আক্তারের মেডিকেল পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ। সর্বশেষ হয়তো ছাত্রলীগ ঘোষণা দিবে যে আক্তারকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। ছাত্রলীগের আইনে অপরাধের শাস্তি এটাই।
তবে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ছাত্রলীগে ইতিহাসে এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আরও একাধিকবার বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে শত শত কোটি টাকা বাণিজ্য করেছে। এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আক্তার প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অতীতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে শুধু।
২০১২ সালে ৩৩তম বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল। এটার সাথেও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জড়িত ছিল। এই প্রশ্নপত্র বাজারজাত করে দিয়েছিল ছাত্রলীগের নেতারা। ঢাকায় বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার মাধ্যমে বাজারজাত করা হয় বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছিল। ছাত্রলীগের একজন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক শীর্ষ নেতা ও বঙ্গবন্ধু হলের এক নেতা বিসিএসের প্রশ্নফাঁসে সরাসরি জড়িত ছিল।
তারপর ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের জড়িত ২১ জনের মধ্যে ১৮ জন বিভিন্ন কমিটির পদধারী নেতা ছিলেন। আর তিনজন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
অভিযুক্তদের মধ্যে ছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপসম্পাদক মহিউদ্দিন রানা, সহসম্পাদক বেলাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মশিউর রহমান, আপ্যায়ন সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক আবু জোনায়েদ, পাঠাগার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মাসুদ রানা, এফ রহমান হলের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সম্পাদক লাভলু রহমান, জহুরুল হলের উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো. বায়েজিদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এম ফাইজার নাঈম, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের উপগণশিক্ষা সম্পাদক আফসানা নওরিন, রোকেয়া হলের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা তুজ জোহরা, সূর্য সেন হলের উপপ্রচার সম্পাদক সাবিরুল ইসলাম, জগন্নাথ হলের বর্ধিত কমিটির সহসম্পাদক শাশ্বত কুমার ঘোষ, ঢাকা কলেজের সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও সাগর সাহা, সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক সহসভাপতি প্রণয় পাণ্ডে ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সভাপতি রাজীবুল ইসলাম। হাসিবুর রহমান, খালিদ হাসান ও রবিউল ইসলাম ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সক্রিয় কর্মী। এ ছাড়া আছেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সভাপতি ইশরাক হোসেন।
এমনকি ২০১১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছিল।
Discussion about this post