বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫
Analysis BD
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home অতিথি কলাম

সিটিং বাসের সংজ্ঞা চাই

মার্চ ৩০, ২০১৭
in অতিথি কলাম
Share on FacebookShare on Twitter

কেফায়েত শাকিল

সেদিন ছিল শুক্রবার। দুপুরে অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই বাসা থেকে বের হলাম। সায়েদাবাদ জনপথের মোড়ে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। যাত্রাবাড়ীর দিক থেকে মেশকাত পরিবহনের একটি বাস এলো। উঠতে গেলে চালকের সহকারী (হেলপার) জানিয়ে দিল ২০টাকার নিচে ভাড়া নেই। জিজ্ঞেস করলাম কেন? জবাবে সে বললো, “এটা ননস্টপ স্পেশাল সিটিং বাস”। যদিও রাজধানীর গণপরিবহনে দীর্ঘ সময়ের যাতায়াতের অভিজ্ঞতা বলে, মেশকাত একটি ‘উন্নতমানের লোকাল সার্ভিস’। তবু ভাবলাম এখন যেহেতু সিটিং হয়েছে, হয়তো স্বভাবও বদলেছে। কিছুটা ব্যস্ততা থাকায় তর্ক ছাড়াই উঠে গেলাম বাসে। আমি যখন উঠেছিলাম তখন গাড়ি অনেকটা খালিই ছিল, তবে মতিঝিল পর্যন্ত যেতেই ভরে গেল। ইতোমধ্যে আদায় করে নেয়া হলো ভাড়াও। সায়েদাবাদ থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে ১০ টাকার পরিবর্তে গুনতে হলো ২০ টাকা। যাক বেশি টাকা গেলেও শান্তিতে যেতে পারলে কিছুটা স্বস্তি পাই। কিন্তু সব সিট ভরে যাওয়ার পরই বের হয়ে আসে মেশকাত পরিবহনের আসল রূপ। পল্টন পর্যন্ত যেতে বাসের ভেতর আর তিল ধারণের জায়গা নাই। তবু মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকে যাত্রী নিতে। কখনো যাত্রী নামাচ্ছে আবার কখনো উঠিয়ে নিচ্ছে।

এটা আমার একদিনের একটি দৃশ্যের বর্ণনা। যারা রাজধানীর গণপরিবহনে যাতায়াত করেন তাদের সবার সাথেই প্রতিদিন ঘটছে এমন ঘটনা। রাজধানীর গণপরিবহনের এই অবস্থা দেখে সাধারণ সব যাত্রীর মতো আমারও এখন একটাই প্রশ্ন, আসলে সিটিং বাসের সংজ্ঞা কী। ইহা কত প্রকার ও কি কি?

রাজধানীর গণপরিবহনে নিয়মিত যাতায়াত করছি অন্তত ৮ বছর ধরে। আট বছরে যেসব বাসকে লোকালে সেরা বাস হিসেবে জেনে বা দেখে এসেছি, গত কয়েক মাসে দেখছি সামনে-পেছনে “নতুন স্টিকারে সিটিং সার্ভিস, গেটলক সার্ভিস, ননস্টপ সার্ভিস বা কম স্টপিজ সার্ভিস” লাগিয়ে সেগুলো বনে যাচ্ছে স্পেশাল। এইসব বাস একদিকে যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে, অন্যদিকে কম দূরত্বের যাত্রীদের বাসে না তুলে হয়রানি করছে। এছাড়াও এসব বাসের বিরুদ্ধে ছাত্রদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেয়া, সিটিং ভাড়া নিয়েও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা, যাত্রীদের সাথে অশোভনীয় আচরণ করা ও কখনো কখনো যাত্রীদের গায়ে হাত তোলার মতো অভিযোগও উঠছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে এসব সিটিং বাসকে চিটিং সার্ভিস বলে আখ্যা দিতে দেখা গেছে স্বয়ং সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রীকেও। অথচ এখনো নিজেদের অবস্থানে অটল আছে এসব সিটিং বাসের মালিক-শ্রমিকরা। শুধু অটল নয়, এখন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। এসব দেখে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগছে কোথা থেকে এত শক্তি পাচ্ছে এসব বাস মালিক বা শ্রমিকরা?

রাজধানীসহ সারাদেশের গণপরিবহনগুলোর নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় আছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। তাদের দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, গণপরিবহনে প্রতি কিলোমিটার যাতায়াতের জন্য যাত্রীদের গুনতে হবে ১.৭০ টাকা। সেই হিসেবে ১১.০৩ কিলোমিটার দূরত্বে ফার্মগেট থেকে যাত্রাবাড়ীর ভাড়া হয় ১৭ টাকা। অথচ এ রুটে চলাচলকারী মেশকাত, খাজাবাবা, ৮ নম্বর সিটিং, এটিসিএল ও লাব্বাইকসহ কয়েকটি পরিবহন হাতিয়ে নিচ্ছে সর্বনিম্ন ২০ থেকে ৩০ টাকা। শুধু ফার্মগেটের যাত্রীদের থেকে ২০ টাকা নেয়া হলেও বলা যেত তিন টাকা বেশি নিয়েছে, এটা সামান্য। কিন্তু সমপরিমাণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে শাহবাগ, বাংলামটর বা কারওরান বাজারের যাত্রীদের থেকে। আবার শিখরসহ কয়েকটি বাসতো মাঝ রাস্তার যাত্রী নিতেই অনিচ্ছুক। তাদের দাবি, যেখানেই যান মিরপুরের ভাড়াই দিতে হবে।

আরও আগ বাড়িয়ে চলছে উত্তরা-পোস্তগোলা সড়কের রাইদা পরিবহন। তারা মালিবাগ থেকে বাসাবো পর্যন্ত মাত্র ৩ কিলোমিটার যাতায়াতের জন্য হাঁকছে ১৫ টাকা ভাড়া। আর আজিমপুর রোডের উইনার, ঠিকানা, ভিআইপি-২৭ বাসের কথাতো বলারই অপেক্ষা রাখে না। কারণ ভিআইপি বলে কথা, তারাতো একটু বেশি দাবি করতেই পারে! তাই ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া চাইতেও তাদের বুক কাঁপে না। এছাড়া নূর এ মক্কা, ল্যামস, জাবালে নূর, জাবালে তূর, বিহঙ্গ, সময় নিয়ন্ত্রণ, আয়াত, মনজিলা, ভিক্টোরিয়াসহ নানা নামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজে উঠেছে অসংখ্য চিটিং সার্ভিস। যারা কোনো প্রকার স্টপিজ ছাড়া ও টিকেটবিহীন ইচ্ছেমতো যাত্রী তুলছে অথচ সিটিং বা স্পেশাল সার্ভিস বলে বাড়তি ভাড়া আদায় করে নিচ্ছে।

কেন বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে সহজভাবে সুন্দর জবাব দিচ্ছেন এসব বাস মালিক-শ্রমিকরা। তাদের দাবি, স্পেশাল সেবার বিনিময়ে তারা বাড়তি কিছু আশা করতেই পারেন। এটা অপরাধের কিছু না। তবে তাদের এমন দাবির বিপরীতে বিআরটিএ বলছে, রাজধানীতে সিটিং বাস বলতে কোনো পরিবহনের অনুমোদন তারা দেয়নি। তারা আরও বলছে, গণপরিবহনের ভাড়া নির্ধারণের সময় সিট প্রতি যাত্রী হিসেব করেই তারা ভাড়া নির্ধারণ করেন এবং দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার কোনো অনুমতি নেই। এমতাবস্থায় সিটিং বলে কোনো সেবাই থাকতে পারে না। তাই বাড়তি ভাড়া নেয়াকে সাপোর্ট করার তো কোনো যোক্তিকতাই নেই।

বিআরটিএ’র বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তারা সিটিং সার্ভিস নামে কোনো সার্ভিসের অনুমোদন দেয়নি। তার বলছে, এই পরিবহন বেআইনি। আবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীও গণপরিবহনের এই নৈরাজ্যের বিপক্ষে। স্বয়ং যোগাযোগ মন্ত্রী ও বিআরটিএ বিপক্ষে থাকার পরও কোনো শক্তিতে এভাবে মানুষকে জিম্মি করে এই বেআইনি ব্যবসা করছেন বাস মলিকরা? প্রশাসনের নাকের ডগায় চলা ক্রমবর্ধমান এই নৈরাজ্য বন্ধের পদক্ষেপইবা নেয়া হচ্ছে না কেন? বিআরটিএ বা যোগাযোগ মন্ত্রণালয় যদি এসব বাসের লাগাম টেনে না ধরে তাহলে কে নিয়ন্ত্রণ করবে এদের? এখন এটাই প্রশ্ন নগরবাসীর।

লেখক  : সংবাদকর্মী

সম্পর্কিত সংবাদ

Home Post

গণতান্ত্রিক বৈধতা নেই এমন সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে ভারত : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

জানুয়ারি ৪, ২০২৪
অতিথি কলাম

জনাব খন্দকার গোলাম ফারুক, নাকে খত দিন!

জুলাই ১৭, ২০২৩
অতিথি কলাম

সিরাজ সিকদার খুন : ক্রসফায়ার প্রবর্তনের দিন

জানুয়ারি ২, ২০২৩

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ১৫ বছর পরেও বেপরওয়া খুনিরা, সুবিচার পায়নি শহীদ পরিবার

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Trademark Web based poker Crazy Expensive diamonds Gambling enterprise Video slot Genuine Imitation Financial

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • পাহাড়ে পরিকল্পিতভাবে বাঙালি উচ্ছেদ ও ডি ইসলামাইজেশন করা হচ্ছে

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • Tagesordnungspunkt Spielbank Maklercourtage Ohne Einzahlung 2024

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না হয়ে রাজনীতির হাতিয়ার: গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫

সন্ত্রাসের দুই মুখ: গাইবান্ধার সিজু হত্যা ও বসুন্ধরায় সামরিক ষড়যন্ত্র

আগস্ট ১০, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব: গণআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্ররূপান্তরের যুগসন্ধিক্ষণে রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক দায় ও চূড়ান্ত অগ্নিপরীক্ষা

মে ৩১, ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব

মে ২১, ২০২৫

ইশরাকের মেয়র হতে বাধা কোথায়?

মে ২১, ২০২৫

© Analysis BD

No Result
View All Result

© Analysis BD