যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে বাংলাদেশে মত প্রকাশের অধিকারকে আরও খর্ব করার চেষ্টা জোরদার করেছে সরকার।
এমনকি সরকার ফেসবুককে ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করছে বলেও এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি।
মীনাক্ষী গাঙ্গুলির নামে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয় ,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করে সহিংসতাকে উস্কে দেয়ার বিষয়টি মোকাবেলা করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ কিন্তু প্রায়শই শৃঙ্খলা রক্ষার চেয়ে সমালোচনা বন্ধ করাই হয় রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য।
এতে বলা হয় যখন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা অনেকেই খুন হয়েছেন। কিন্তু মত প্রকাশের অধিকার সুরক্ষার বদলে সরকারের পক্ষ থেকে বরং সতর্ক করে বলা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে যেনো আঘাত না দেয়া হয়।
এমনকি সরকার প্রায়ই প্রিন্ট ও ডিজিটাল মিডিয়াও উপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে বলেও অভিযোগ করা হয় ওই বিবৃতিতে।
ফেসবুকে ‘মজা লস’ নামক একটি ব্যঙ্গাত্মক পেজ -এর পরিচালকের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আবার গত বছর সেপ্টেম্বরে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের অভিযোগ আনা হয়েছে দিলীপ রায় নামে একজন ছাত্রের বিরুদ্ধে।
এখন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ফেসবুককেই সরাসরি সেন্সরশিপ আরোপের ভূমিকায় নিতে চাইছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য ফেসবুককে আলাদা নিয়মাবলী নির্ধারণের প্রস্তাবের কথা বলেছেন, যা তার মতে দেশের সংস্কৃতি, প্রথা, ইতিহাসকে সুরক্ষা দেবে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
ফেসবুক ২০১৩ সাল থেকেই কিছু কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ফেসবুক কিছুদিন বন্ধও রাখা হয়েছে। সরকারী কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে ফেসবুক কর্মকর্তাদের।
ফেসবুক কিছু ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্যও সরবরাহ করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে বললেও তাদের বিবৃতিতে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের সাথে সে উদ্ধৃতির সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। মি: জাকারবার্গের যে উক্তিটি হিউম্যান নাইটস ওয়াচ ব্যবহার করেছে সেটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
এতে মিস্টার জাকারবার্গ বলেন, “অপ্রয়োজনীয় ও অতিমাত্রায় সরকারী হস্তক্ষেপ থেকে আমাদের কমিউনিটিকে সুরক্ষা দিতে আমরা লড়াই করছি”
মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে প্রস্তাবিত নির্দেশনাগুলো আইন বহির্ভূত হতে পারে এবং অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে যা ফেসবুককে যারা মত প্রকাশের প্লাটফরম হিসেবে ব্যবহার করে তাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
“এখন এটি ফেসবুকের উপর নির্ভর করবে যে তারা সরকারের প্রস্তাবনাগুলো প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য লড়াই করবে কি-না”।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
Discussion about this post