রুদ্র আহনাফ
গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ হিসেবে পরিচিত। গণমাধ্যমের মূল কাজ হল সমাজের অন্যায়-অনিয়ম, অসঙ্গতিগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরা। সমাজ সংস্কারে ভুমিকা পালন করা। আর এই গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদেরকে বলা হয় জাতির বিবেক। কারণ জাতি গঠনে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। দেশ-জাতির সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলে। মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলে।
কিন্তু আমরা যদি আমরা বাংলাদেশের গণমাধ্যমের দিকে তাকালে দেখতে পাবো এর উল্টো চিত্র। বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম অন্যায় অপকর্মকে চাপা দেয়ার কাজে ব্যস্ত। মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলার পরিবর্তে একজন নাগরিকের সম্মান লুট করার কাজে ব্যস্ত।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের আসল চরিত্র দেশবাসীর সামনে ফুটে উঠেছে। সরকারের সেবাদাস গণমাধ্যমগুলো মামুনুল হক ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার চরিত্র হরণের জন্য আদা জল খেয়ে লেগেছে।
গত দুইদিন আগে কিছু ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন মামুনুল হক। তিনি তার কৃত ভুলগুলো ফেসবুক লাইভে এসে জাতির সামনে স্বীকারও করেছেন। কিন্তু গণমাধ্যমগুলোর সংবাদের ভাষা দেখে মনে হচ্ছে তিনি যেন ভুল স্বীকার করে আরও মহা ভুল করেছেন। তাকে বাদ দিয়ে নষ্ট গণমাধ্যমগুলো এখন স্ত্রীর চরিত্র হরণের চেষ্টা করছে।
সর্বশেষ বেরসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও ডিবিসি যা করলো তা নজিরবিহীন ঘটনা। জান্নাত আরা ঝর্ণার চরিত্র হননের জন্য তারা তার ছেলেকে পর্দার সামনে নিয়ে এসেছে। ছেলে তার মায়ের ব্যক্তিগত ডায়েরি পড়ে শুনাচ্ছেন-মামুনুল হক তার মা’র সাথে বিয়ের আগেই অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। আর এটা লাইভ প্রচার করে দুনিয়ার মানুষকে জানিয়েছে টেলিভিশন চ্যানেলটি।
কিন্তু গণমাধ্যমের দ্বায়িত্ব হলো ভুক্তভোগীর নাম ও ছবি প্রকাশ না করা। কিন্তু ঘটনার পর দেখা গেছে শুধু নাম ও ছবি নয় ব্যাক্তিগত ডায়েরী গণমাধ্যমে তুলে ধরেছে। এটা সাংবাদিকতার নীতিতে নিষিদ্ধ।
এছাড়া ডায়েরির তথ্যগুলো সত্য কিনা মিথ্যা সেটা আমরা জানি না। কিন্তু ছেলের মুখ দিয়ে মায়ের অবৈধ কাজ প্রকাশ করে লাইভ প্রচার করার ঘটনা এর আগে পৃথিবীর অন্য কোথাও ঘটেছে কি না আমাদের জানা নেই।
এই ভিডিও প্রচারের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে পেশাদার সাংবাদিকরাই এই নোংরামির সমালোচনা বেশি করছে।
শুধু সরকারের দালালি করার জন্যই নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েছে এই দুই বেসরকারি টেলিভিশন। কোনো সাংবাদিকতো দূরের কথা একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে এমনটা করা সম্ভব না। ওদেরকে আর সাংবাদিক বলা যায় না। ওরা সরকারের পাচাটা গোলামে পরিণত হয়েছে। গোলামরা কখনো সাংবাদিক হতে পারে না।
Discussion about this post