গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত
আমার স্কুল জীবন কাটে মতিঝিল মডেল স্কুলে। স্কুলে পড়ার সুবাদে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সে সকল অনুষ্ঠানে গিয়ে পোস্টারে দেখতাম ম্যাগাজিন পার্টনার “কিশোর আলো”, মতিঝিল মডেলে পড়লেও দেশের সুনামধন্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে ফেইসবুক বন্ধু ছিলো। সবাই দেখতাম কিশোর আলোতে যাচ্ছে, ছবি আপলোড দিচ্ছে সকল বড় বড় মানুষদের সাথে। কিন্তু আমার ছোট বেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি আগ্রহ প্রচুর। সে কারণে কিশোর আলোতে যাই যদি লেখালেখির সুযোগ হয় তবে মন্দ হবে না। প্রথম কাজ করি দুরন্ত শিশু কিশোর পত্রিকায় সহ:সমন্বয়কারী হিসেবে। ২০১৭ সালে নভেম্বর মাসে গেলাম প্রথম মিটিংয়ে কৌতুহল বসত।
মিটিং যাওয়ার সময় তাদের রয়েছে কড়াকড়ি নিয়ম কিনতে হবে চলতি মাসের সংখ্যা সাথে আনতে হবে নিজের লেখা কিংবা আঁকা যা আগে কোথাও প্রকাশ হয়নি। মিটিং যাওয়ার জন্য আমি সেই নিয়ম মেনে অংশগ্রহণ করলাম প্রথম মিটিংয়ে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ টার মতো মিটিংয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার আসা যাক কি হয় তাদের মিটিংয়ে? প্রথমে সকলে মিটিং রুমে বসে, প্রতিবারই তাদের মিটিং কম করে হলেও ৩০ মিনিট দেরীতে শুরু হয় কিন্তু কতৃপক্ষ ঠিকই বড় গলায় বলে সময়ানুবর্তিতা একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য জরুরি কিন্তু তাদের নিজেদের ওই সময়ানুবর্তিতার ঠিক নেই। কিশোর আলো যেহেতু একটা ম্যাগাজিন সেহেতু অবশ্যই হবে লেখালেখি নিয়ে কথা কিন্তু প্রতি মিটিংয়ে আনা হয় একটা গানের দলকে কেননা এইটা হলো লোভ দেখিয়ে ব্রেন ওয়াশ করা পোলাপানদের মিটিং আনার চিন্তা। ২০ টা মিটিং গিয়ে আমি শিখছি শুধু হাত তালি দিতে এছাড়া কিছু শিখার সৌভাগ্য হয়নি৷
এবার আশা যাক এখানে কাজ করে কারা? এখানে কাজ করে আপনার, আমার মতো শত শত কিশোর কিশোরী কিন্তু এখানে তারা নামে ভলেন্টিয়ার হলেও কাগজ-কলমে তাদের কোন পরিচিত নেই, এছাড়া নেই কোন আইডি কার্ডও। এখন আশা যাক এখানে কারা কাজ করার সুযোগ পায় বেশি এখন ছোট এক কাহিনী বলি, কিশোর আলোর তেলবাজি তে দক্ষ একজন সেচ্ছাসেবকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম এখানে কাজ করতে হলে কি করবো সে বলে কিছু না শুধু বড় ভাইদের আনলিমিটেড পাম মারবা তবেই তাদের চোখে ভালো। আর যারা নতুন তারা তো এককথায় নদীর স্রোতের মধ্যে একটা বস্তু পড়লে যেভাবে নিয়ে যায় সেভাবে তারা উড়ে যাবে। আর হ্যাঁ তুমি যদি হও মেয়ে তবে এক মাসে সকলের কাছে প্রিয় হয়ে যেতে পারো আমি যখন কিশোর আলোতে গেলাম তখন আমার সাথে ছেলেগুলো কে দেখতাম কেউ কোন সুযোগ পাচ্ছে না কিন্তু আমাদের সাথে ১০-১৫ টা মেয়ে বান্ধবী, আপু তারা এককথায় এখন লিডার লিডার ভাব চলে আসছে। এখানে স্বেচ্ছাসেবকদের দোষ দেওয়ার চেয়ে যারা কতৃপক্ষ তাদের দোষ সবচেয়ে বেশি কেননা সবসময় তারা বড় গলায় বলে তারা সেরা, তারা সেরা। একজন মানুষ এগুলো শুনতে শুনতে একসময় তার মধ্যে একটা আলাদা ভাব চলে আসে। যারা মিটিং গিয়েছে তারা নিশ্চয়ই এই ভাববাজদের ভালো মতো চিনে।
কিশোর আলো সবকিছুর সাথে আছে না থাকলেও তাদের থাকতে হবেই কিন্তু কিশোর আলোর মূল লক্ষ্য তো এটা হওয়া দরকার একজন পাঠক কিভাবে লেখক হতে পারে। কিশোর আলোর আজকে পর্যন্ত প্রকাশিত লেখায় হাতেগোনা কয়জন পাঠকের লেখা আছে? আমার দৃষ্টিতে একটাও নেই। যাদের লেখা কিশোর আলোতে ছাপানো হয় তাদের প্রত্যেকের বই মেলায় শীর্ষে থাকে, যাদের কার্টুন ছাপানো হয় তাদের কার্টুন মানুষ কিনেই পড়তে পারে তবে কেন এসব করছেন আসলে তা হলে আপনাদের ব্যবসা হবে না। আপনাদের ম্যাগাজিন তো কিনবে না। বলতে পারবেন এই ৬ বছরে কিশোর আলো থেকে একজন ভালো তরুণ লেখক বের করেছেন? বলতে পারবেননা কেননা আপনাদের মুখেই বড় বড় কথা কাজে বালটাও নাই।
কিশোর আলোর একজন বড় পদবী ওয়ালা লোককে ২০১৭ সালে নক দিয়েছিলাম ভাইয়া কিশোর আলোকে আমাদের অনুষ্ঠানে ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে রাখতে চাই কি করতে হবে? তিনি যা বললেন তা বলে আর লাভ নেই কিন্তু সবসময় তিনি বলেন তাদের এখানে কাজ করে সবাই সেরা কিন্তু তার সেদিনের ব্যবহারে তা মনে হয়নি। যেহেতু তিনি একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কিশোর আলোর সেহেতু তিনি প্রক্রিয়াটা বলতে পারতেন এভাবে করো কিন্তু তিনি বললেন তেড়া কথা তোমার কি মনে হয় আমি এসব নিয়ে বসে থাকি, যতসব। আরে ভাই প্রতিটা অনুষ্ঠানে পার্টনার হওয়ার শর্তের মধ্যে একটা আমাদের স্টল দিতে হবে আমাদের প্রোডাক্ট থাকবে মানে টি-শার্ট, ডাইরি ইত্যাদি বিক্রি করবে। যেহেতু এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার সাথে যুক্ত সেহেতু আপনি এই কাজটা না করলেও পারতেন। আমি কারো নাম প্রকাশ্যে বলতে রাজি নয়। এই ব্যক্তির একটা বিশেষ গুন আছে মেয়েদের ম্যাসেজ পাওয়ার সাথে সাথে রিপ্লে কিন্তু ছেলেদের ম্যাসেজ দেওয়ার কম করে হলেও দু’দিন পর রিপ্লে পাওয়া যায় যা আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে।
এবার আশা যাক এক বিখ্যাত ফটোগ্রাফারের কথায় যিনি কিশোর আলোতে আছেন বেশকিছু দিন ধরে কিন্তু এই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার কিছুদিন আগে আমাকে তার ফেইসবুক থেকে আনফ্রেন্ড করেছেন তাতে আমার কিছু যায় আসেনা কেননা কিশোর আলোর কম করে হলেও তেলবাজ ওয়ালা ৩০ থেকে ৪০টা ছেলেমেয়ে আনফ্রেন্ড করছে কেননা আমি বেশি বুঝি এবং সত্য বলি আরকি মানে কেউ কেউ ব্লকও দিয়ে রাখছে। একদিন গ্রুপে পোস্ট দেওয়া হয়েছে মডেল লাগবে আগ্রহীরা কমেন্ট করো আমি কমেন্টে লিখেছিলাম আগ্রহী লিখে লাভ কি আজ পর্যন্ত তো একটা আগ্রহী থেকে মডেল কে কিশোর আলোর ম্যাগাজিনে দেখলাম না, সেই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার আমাকে শুরু করলেন উচ্চ স্তরের জ্ঞান দেওয়া শেষ পর্যন্ত আমার তার যুদ্ধ শেষ হয় কমেন্টে। আজ পর্যন্ত আমি নিজে দেখি নাই কোন মডেল তাদের বিশেষ টিমের বাইরে। এরূপ ঘটনা রয়েছে বহু তিনি শুরু করে দিয়েছেন যুদ্ধ আমার সঙ্গে। কিন্তু কালকের সে ঘটনা নিয়ে এক লাইন লিখতে দেখলাম না তার আইডিতে। তিনি এত বিখ্যাত ফটোগ্রাফার হলে কিআনন্দের মতো বড় ইভেন্টে ছবি তুলেন না শুধু পিছনে ৮-১০ টা পোলাপান নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
কিশোর আলোর ২০১৮ সালের কিআনন্দ ভলেন্টিয়ার হওয়ার সুযোগ হওয়ায় দেখেছি তারা সেরাদের দিয়ে সেরা হতে ভালোবাসে কেননা সকল অতিথি, গায়ক, আর্টিস্ট সকলেই পাবলিক ফিগার আর তারা জানে তাদের দেখার জন্য হলেও পোলাপান কিআনন্দে আসবে। কিআনন্দে কাজ করে দুইশো’র কাছাকাছি কিআ বাহিনী তাদের ৮০ ভাগের মধ্যে নেই কোন যোগ্যতা নেই কোন দক্ষতা কেননা তারা তাদের পাঁ চাটাচাটি করে এমন কিছু পোলাপান নিয়ে তারপর সব নতুনদের নিয়ে সাজায় তাদের স্বেচ্ছাসেবক টিম। কিন্তু নতুনদের মধ্যে একটা আগ্রহ থাকে কি হয় কাজ করে দেখি সে কৌতূহল থেকে আমিও কাজ করি কিন্তু তারা একটা আইডি কার্ড,টি শার্ট, একটা পিকনিকের জন্য এত নিচে কিভাবে নামতে পারে জানা নেই। যে জানেও না কিআ কি, কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় ভলেন্টিয়ার হওয়ার জন্য সে যখন এ জায়গায় সুযোগ পায় কাজ করার তার ভাব ইকটু বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। আমি বলতে পারবো এবার সুযোগ পাওয়া ১৮২ জন ভলেন্টিয়ারের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই যোগ্য নয় তারা আসলে কিভাবে নির্বাচন করে স্বেচ্ছাসেবক তার গল্প বলছি আমার নিজের সাথে যেটা ঘটেছে ওটাই। একজন বলছে এখানে ত্রুটি আছে তা না শুনে কিভাবে চলে যায় একজন স্বেচ্ছাসেবক তা আমার জানা নেই। আমি যত সম্ভব জানি এবার কিআনন্দের আগে কমপক্ষে ১০টার কাছাকাছি মিটিং হয়েছে সেখানে তাদের কি শিখালেন আচ্ছা আপনারা তো স্বেচ্ছাসেবকদের ছবি এমন কেন, নাম এটা না কেন ওটা কেন এ নিয়ে তিন মিটিং শেষ করতে দক্ষ। আপনাদের পরিচয় করাতে দু মিটিং শেষ করতে দক্ষ।
২০১৯ কিআনন্দে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমার কাজ করার কোন ইচ্ছে নেই আগে থেকেই কিন্তু তাও এপ্লাই করেছি তাদের ভাবনা গুলো জানার জন্য আর ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে যা ভেবে রাখছি তার হালকা এদিক ওদিক হয়েছে। আমার ইন্টারভিউ নিয়েছেন এক বিশাল বড় লেখক আপু। প্রথম প্রশ্নই তার কালের কণ্ঠে কি করো? আমার মুখ থেকে জবাব আসে ফিচার লিখছি একবছর যাবত এবং মডেল কন্ট্রিবিউটিং করছি। তারপর তিনি বললেন মডেল হিসেবে কিশোর আলোর ছেলেমেয়েদের কেন নিয়ে যাও? আমার মুখ থেকে জবাব আসে আপনি কোন প্রমাণ দিতে পারবেন আমি কাউকে মডেল হিসেবে নেওয়ার জন্য ম্যাসেজ দিয়েছি? আমি পোস্ট করি যারা আগ্রহী হয় তাদের মধ্য থেকে মডেল নির্বাচন করি। আমার কথা হলো তারা বলে কিশোর আলোর পোলাপান কিন্তু তাদেরতো বেতন দিয়ে কিশোর আলো রাখেনাই আর যদি রাখেও তবে কি অন্য জায়গায় কাজ করতে পারবে না? আচ্ছা বলে রাখা ভালো ২০১৯ শুরুর দিকে কিশোর আলোর একটি টিম গঠন করা হয় সেখানে ১০০ জনের মতো পাঁ চাটাচাটিতে ওস্তাদ ওয়ালা পোলাপান আছে আর সেখানে কাজ করার প্রথম শর্ত নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করা যাবে না তাও রাজি অনেকে কেননা সেলফি তোলা যাবে স্টারদের সাথে। তৃতীয় প্রশ্ন করে তোমাকে যদি এখন একবছরের জন্য কিশোর আলোর সাথে যুক্ত করা হয় তবে অন্য কোথাও কাজ করতে পারবে না তখন কি করবে? আমি জবাব দেই যেখানে আমার কাজ করার সুযোগ বেশি সেখানেই কাজ করবো। কিন্তু আমার কথা হলো স্বেচ্ছায় কাজ করবো তাও এত শর্ত কেন কারণ কিছু পামওয়ালা পোলাপানের জন্য। কিআ চিনে একদিন আর তৃতীয় দিনে পোস্ট দেয় লাভ ইউ কিআ……. আরো কত কি? আমাকে পরের প্রশ্ন করে একদিনে যদি কিশোর আলোর প্রোগ্রাম হয় এবং কালের কণ্ঠের প্রোগ্রাম হয় তবে কোথায় যাবে তুমি? আমি বলি আমি যেখানে কাজ করছি সেখানেই যাবো যেহেতু এখন কিশোর আলোর সাথে আমি কোনভাবেই যুক্ত নই তবে কালের কণ্ঠের অনুষ্ঠানে যাবো। আমার কথা হলো একজন স্বেচ্ছাসেবক নির্বাচন করার জন্য এগুলো কিরূপ প্রশ্ন আমার জানা নেই তারা আসলে নিজেরা সবসময় সেরা হতে চায় কিন্তু সেরা হওয়ার সাথে সাথে মানসিকতা সেরা হতে হয় তাদের মধ্যে সকলের ধারণা আমাদের কেউ থামতে পারবে না আমরা যা করবো তাই সেরা হবে তা ফল সরূপ পেলাম আমরা একটা আবরারের মৃত্যু। এমন শত-শত ঘটনা রয়েছে ইন্টারভিউতে উদ্ভট প্রশ্ন করার তাদের কথা একটা কিশোর আলো ছাড়া কোথাও কাজ করতে পারবা না! না!! না!!!
তারপর সে প্রশ্ন করে একবছরে কিশোরদের কয়টা প্রোগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছো? আমি বললাম একটাতেও না তিনি বললেন তার মানে তুমি দর্শক হিসেবে যোগ্য। আমার কথা হলো তারা গ্রুপে পোস্ট করে কারা কারা কালকের ইভেন্টে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চাও তারা নাম, শ্রেণি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লিখে কমেন্ট করো আমি সেখানে কমেন্ট করলাম কিন্তু আমাকে কেন নেওয়া হয় না কারণ আমি তাদের পিছনে তেল মারতে পারি না এবং কারো পাঁ চাটতে পারি না তাই। একজন আগ্রহী লিখলে কোন যোগ্যতা দিয়ে তারা স্বেচ্ছাসেবক নেয় তা আমার জানা নেই হয়তোবা কোন গোপন জাদু আছে তা দ্বারা তারা যোগ্যতা যাচাই করে।
অনেকের প্রশ্ন জাগতে পারে এত কিছু হয় কেউ কিছু বলে না কেননা তারা ২২বছরে সারা দেশে এক খুঁটি স্থাপন করে ফেলেছে। আসলে বলে অনেকেই তা কেউ শুনে না আবার কেউ কেউ আড়ালে সরে যায় এরূপ কর্মকাণ্ড থেকে। কেননা তারা ব্যবসা ছাড়া কিছু বুঝে না ছোট একটা মিটিং এও তারা চিপস দেয় তাতেও স্পন্সর নেয় তারা। প্রতি মিটিংয়ে পাচঁজনকে পুরষ্কার দেয় তাও একটা প্রতিষ্ঠান পুরষ্কার দেয় এককথায় ব্যবসা ছাড়া কোন কাজই করে না৷ এবার বলা যাক এক অনুষ্ঠানের কথা প্রথম আলোর সেটা সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয় সেখানে কিশোর আলো থেকে ১০০ স্বেচ্ছাসেবক যাওয়ার সুযোগ পায় কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আর সব মিলিয়ে মনে হয় ৫০ জনের বেশি দর্শক ছিলো না একশো জনের একজন আমিও ছিলাম। এরূপ প্রথম আলোর শত শত প্রোগ্রামে স্বেচ্ছাসেবকদের নেওয়া হয় এবং স্বেচ্ছাসেবকরা যায় ফ্রীতে ঢুকে যাবে প্রোগ্রামে এবং ছেলে-মেয়ে একসাথে সময় কাটাবে অনায়াসে এবং স্টারদের সাথে ছবি তুলতে পারবে।
কয়েকদিন আগে কিশোর আলোর এক টপ মডেল আমার পোস্টে মডেল হতে আগ্রহী কমেন্ট না করে ইনবক্সে নক দেয় প্রসেসিং টা কি? আসলে উঠতি মডেল একটা ডিমান্ড আছে না তাই ইনবক্সে নক দেয় কিভাবে মডেল হওয়া যায়। আমি সকল প্রক্রিয়া বললাম তারপর শেষে যখন বললাম কিশোর আলো থেকে কোন সমস্যা নেই তো মডেল হলে কেননা আমি তো আগেই জানি তারা অন্য জায়গায় কাজ করবে তারা যদি টাকা দেয় তবেই। তারপর সে লুতুপুতু হয়ে বললো ভাইয়া আমাকে তো দিবে না অফিস থেকে, আমি জানতাম তাকে দিবে না কেননা সেও একজন কিশোর আলোর তেলওয়ালা স্বেচ্ছাসেবক। যখন বললাম তাহলে শেষ পর্যায় পর্যন্ত আসার কারণটা কি পরিকল্পিত? কিভাবে নেওয়া হয় মডেল সে উঠতি মডেলের মতো একটা ইমোজি দিয়ে দিল। আসলে তারা নিজেদের কি ভাবে?!এবং অন্যদের কি ভাবে! তা আমার জানা নেই। কিন্তু এই কর্মকান্ড গুলো করাটা কতটা যৌক্তিক একটা সেরা ম্যাগাজিনে স্বেচ্ছাসেবক হয়ে তার উত্তর নেই।
এতক্ষণ বহু কাহিনী বললাম আমার সাথে ঘটেছে তার কোনোটি মিথ্যা নয় আর আজকেই কেন বললাম তারও কিছু কারণ রয়েছে কেননা তখন তাদের কেউ খারাপ জানতো না তখন এটা লিখলে সকলের কাছে আমি খারাপ হতাম আর তারা হতো ভালো।
১ নভেম্বর নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না কিন্তু একটা ঘটনা না বললেই নয় ঘটনা ঘটেছে প্রাণ ফুটো এবং ফটো এক্সিবিশনের মাঝামাঝি স্থানে৷ আমি ঠিক ১২টার পর থেকে সেখানে গাছের সাথে হেলান দিয়ে বসে ছিলাম। একটা বাচ্চা দেখলাম চিৎকার দিলো। বাচ্চাটার মা বললো কি হইছে বাচ্চাটা পাঁ দেখাচ্ছিলে, তখন বুঝতে পারিনি যে এই ত্রুটির জন্য একজনের প্রাণ চলে যাবে। একটা মায়ের বুক খালি হয়ে যাবে। একজন বাবার স্বপ্নগুলো শেষ হয়ে যাবে তাদের দায়িত্ববোধের অভাবে। কেন সামনের হাসপাতালে নেওয়া হয়নি? কেন অনুষ্ঠানের সময় ১৫মিনিট স্কিন ওফ রাখা হয়? কেন চেক করা হয়নি বৈদ্যুতিক সংযোগে কোন ত্রুটি আছে কিনা? কেন জানানো হলো না দর্শকদের? কেন কনসার্ট বন্ধ করা হলো না? কেন? কেন?কেন? এরূপ হাজারো প্রশ্ন আমার, আপনার, সকলের মনে।
প্রথম আলো সবসময় তাদের ব্যবসা খুঁজে হয়তোবা এই ছেলের মৃত্যুটা তাদের ব্যবসার কাছে তুচ্ছ। আমি সে সময় হাততালি দিয়েছি গান শুনে এখন নিজেকেই অপরাধী লাগছে কেননা একজন মারা গেলো আর আমরা ঠিকই কনসার্টে লাফালাফি করে আসলাম। আমার নিজেরই দুদিন যাবত অস্থির লাগছে। সম্পাদক মশাই, আয়োজকবৃন্দ আপনারা নিজেদের কোনদিন ক্ষমা করতে পারবেননা বলে দিলাম।
প্রিয় আবরার ছোট ভাই কোনদিন দেখা হয়নি, হয়তোবা বেঁচে থাকলেও দেখা হতো না। তুই ওপারে ভালো থাকিস। আল্লাহ আবরারকে জান্নাতবাসী করুক৷ আমিন।
লেখক: সহঃসমন্বয়কারী দুরন্ত’ শিশু-কিশোর পত্রিকা
(লেখাটি লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহিত)