অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। জ্বর হলেই হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করলে ধরা পড়ছে ডেঙ্গু। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এখন আর তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ভর্তি ৮০ ভাগই ডেঙ্গু রোগী। মিনিটে মিনিটে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। মায়েরা আসছে রুগ্ন শিশুকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে। হাসপাতালে একটাও সিট খালি নেই! কী মর্মান্তিক পরিস্থিতি। রোগীর জায়গা না হলে কী হবে অ্যাডিস মশারা ঠিকই রয়েছে হাসপাতালে। রোগীদেরকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা।
সরকারি তথ্য মতে সারা ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) আরও ৬৮৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এই সংখ্যা গত এক মাসের (২৬ জুন-২৭ জুলাই) মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২৪ জুলাই সবচেয়ে বেশি ৬৬৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। এখন পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছে কমপক্ষে ৩৫ জন। বলা যায়-ডেঙ্গুর কারণে সারাদেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
অথচ ঢাকা দক্ষিন সিটির মেয়র সাঈদ খোকন বললেন-এসব নাকি গুজব। গণমাধ্যম এবং একটি মহল নাকি ডেঙ্গু নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়-ঢাকার দুই সিটির মেয়র মশা নিধনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজ করেনি। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মানুষের সামনে চাপাবাজি করলেও বাস্তবে তাদের কোনো কার্যক্রম নগরবাসীর চোখে পড়েনি। ডেঙ্গুর ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে মশার ওষুধ নিয়ে সিটির কোনো লোককে এলাকায় আসতে দেখা যায়নি।
মোট কথা ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ অবস্থাটাকে দুই সিটির মেয়র কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। বরং তারা রোগীদের নিয়ে আরও উল্টো উপহাস করছেন।
এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে। তারা বলছেন, মেয়র হয়েছেতো বাবার কোটায়, জনগণের দুঃখ কেমনে বুঝবে? হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীর ছড়াছড়ি, এমনকি হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। আর তিনি বলেন এসব নাকি গুজব। তাহলে কি মানুষগুলো হাসপাতালে পিকনিক করতে এসেছে?
জানা গেছে, এ বছর অ্যাডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলে। তবে দরিদ্র ও মধ্যবৃত্ত মানুষের মধ্য আক্রান্তের হার এ বছর বেশি। কর্মক্ষম মানুষের ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় অনেক পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, রাজধানীর বাইরে এর আগে কিছু-কিছু জেলা থেকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হবার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হবার সংখ্যা খুব কম। কিছু রোগী আছে যারা ঢাকা থেকে ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার বাইরে গেছে।