অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বহুল আলোচিত তিন দিনের ভারত সফর করে এসেছেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। দলের মধ্যম সারির নেতাদের বিশাল এক বহর নিয়ে ওবায়দুল কাদের এ সফর করেছেন। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বৈঠকের বিষয়টিকে রাজনীতিতে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছিলেন বিশ্লেষকরা।
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভারত যাওয়ার আগে বলেছিলেন তাদের এ সফর পার্টি টু পার্টি। এটা কোনো সরকারি সফর নয়।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামীতে আবার ক্ষমতায় আসতে ভারতের সহযোগিতার আশায় আওয়ামী লীগ নেতারা দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে পারলেও বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ এর সাক্ষাৎ পায়নি আওয়ামী লীগ নেতারা।
জানা গেছে, ভারত সরকারের পলিসি নির্ধারণ করে মূলত দলের সভাপতি ও সিনিয়র নেতারা। দলের পলিসির বাইরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদির কোনো দেশের সঙ্গে অতিরিক্ত সম্পর্ক গড়ার কোনো সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে সেটা নির্ধারণ করে বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। এখানে সরকার প্রধান শুধু মিডিয়া হিসেবে কাজ করে।
এদিকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এর সঙ্গে বৈঠক করার জন্য অনেক দিন ধরেই আওয়ামী লীগ নেতারা চেষ্টা করে আসছেন। এবারের সফরে অমিত শাহ এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সেই বৈঠকে অমিত শাহ আসেন নি। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্মানে রাতের একটি ডিনারেও অমিত শাহ উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেন নি।
অমিত শাহ এর সাক্ষাৎ না পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অনেকটা হতাশ হয়েই ভারত থেকে ফিরেছেন। মোদির সঙ্গে একটি বৈঠক করলেও বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান কি সেটা জানতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতারা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মনমোহন সিং যে আওয়ামী লীগকে একচেটিয়া সাপোর্ট দিয়েছিলেন সেটাও ছিল ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের নির্দেশে। মনমোহন সিং তার নিজের ইচ্ছায় কিন্তু আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচন করতে বাধ্য করেনি। ওই সময় পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছিল কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
আর ভারত থেকে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটার মূল উদ্দেশ্য হলো দলীয় নেতাকর্মীদেরকে শান্তনা দেয়া। হানিফ বুঝাতে চাচ্ছেন যে আগামী নির্বাচনেও ভারত তাদেরকে সাপোর্ট দেবে।
এছাড়া অমিত শাহ এর সাক্ষাৎ না পাওয়ায় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের ভারত সফর পুরোটাই ব্যর্থ হয়েছে। খালি হাতেই ভারত থেকে ফিরে এসেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।