অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
আবারো আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সুপরিকল্পিতভাবে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে নৃশংসভাবে হত্যার সময় আলোচনায় এসেছিলেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। কথিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা করতে সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জাহাঙ্গীর কবির নানককেই পিলখানায় পাঠিয়েছিলেন। নানক আর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বের হয়ে আসার পর রাতের আধারে বিডিআরের পোশাক পরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সেনা কর্মকর্তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশগুলো মাটির নিচে পুতে রাখে। পরবর্তীতে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর কবির নানক আর সাহারা খাতুন কথিত সমঝোতার কথা বলে পিলখানায় ঢুকে কথিত বিদ্রোহীদেরকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের জন্য আরও উস্কে দিয়ে আসছিলেন।
সেই জাহাঙ্গীর কবির নানকই আবার রোববার মধ্যরাতে কথিত সমঝোতার বাণী নিয়ে আসছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে কথিত শান্তির বাণী শুনিয়ে নানক ক্যাম্পাস ছাড়ার পরই রাতের আধারে বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটে।
টিভি চ্যানেলগুলোর ফুটেজে দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর কবির নানক যখন ঢাবি ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে আন্দোলনকারীদেরকে কথিত শান্তির বাণী শুনান তখন তার পাশে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। নানক তার বক্তব্য শেষ করে জায়গা ত্যাগ করার পর পরই ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি জঙ্গি মিছিল বের করে ছাত্রলীগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ছাত্রলীগ যখন ক্যাম্পাসে মিছিল করে তখনই বাতি নিভিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, ছাত্রী ও ভিসির বাস ভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। মিছিলকারীদের মধ্য থেকেই একটি গ্রুপ মুখে কালো কাপড় বেধে ঢাবি ভিসির বাস ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
ভাঙচুরের সময় ঢাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা তখন ভিসি সঙ্গে ছিলেন। তিনি আজ গণমাধ্যমকে বলেছেন, হামলাকারীরা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে ভিসির বাসায় ঢুকে ভাঙচুর করেছে।
ঢাবি ভিসির বাস ভবনে হামলা-ভাঙচুর নিয়ে অনেক প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মী যখন ঢাবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মিছিল করে তখন ভিসির বাস ভবনে ভাঙচুর করা হয়। ছাত্রলীগের কয়েক হাজার নেতাকর্মীর সামনে ভিসির বাস ভবনে শিক্ষার্থীরা হামলা-ভাঙচুর করবে এটা কেউ বিশ্বাস করে না।
আর ভিসির বাস ভবনে যেভাবে হামলা-ভাঙচুর করা হয়েছে সেটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা সম্ভব না। এটা শুধু ছাত্রলীগের দ্বারাই সম্ভব।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, জাহাঙ্গীর কবির নানকের বক্তব্যের পর ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে কেন? আর নানকে যাওয়ার পরই এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে। এখানে স্পষ্ট হয়ে গেছে, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফাঁসাতেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেধে এ হামলা করেছে। আর জাহাঙ্গীর কবির নানকের ইঙ্গিতেই ছাত্রলীগ এটা করেছে। নানক কথিত শান্তির বাণীর আড়ালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে উস্কে দিয়ে গেছেন। নানকের উস্কানিতেই তারা ভিসির বাস ভবনে হামলা-ভাঙচুর চালায়।