অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কথিত দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর অ্যানালাইসিস বিডির কয়েকটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, সরকারের মূল টার্গেট হলো আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। দিন যত যাচ্ছে সরকারের সেই টার্গেটই ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে।
সরকার এবার আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে না। সরকারের টার্গেট আগামীতে বিএনপিকে বিরোধীদলের আসনে বসানো। এক্ষেত্রে তাদের সামনে বড় বাধা ছিল খালেদা জিয়া। কারণ, খালেদা জিয়া মাঠে থাকলে শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসবে না। আবার দেশি-বিদেশি চাপের কারণে বিএনপিকে বাদ দিয়েও আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করা কঠিন হবে। আর বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের চেষ্টা করলেও খালেদা জিয়া এবার বড় আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুুতি নিয়েছিলেন। সরকার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও ভোটগ্রহণ পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হবে না। এসব বিবেচনা করেই কথিত দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অ্যানালাইসিস বিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখাও সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। সামান্য ২ কোটি টাকার ভিত্তিহীন একটি মামলায় একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ৫ বছরের সাজা দিয়ে কারাবন্দি করায় সর্বমহলেই সমালোচনা হচ্ছে। এর জামিন দেয়ার পরও এটাকে কৌশলে আটকে দেয়ায় সমালোচনা আরও বাড়ছে। জানা গেছে, এসব নিয়ে সরকার এখন চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।
খোঁজ জানা গেছে, ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়ার কাছে কয়েক দফা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে, খালেদা জিয়া এসব প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না।
সরকার মনে করছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বিএনপি এটাকে ইস্যু বানিয়ে প্রতিদিন আন্দোলনের হুমকি দেবে। খালেদা জিয়া ইস্যুতে প্রতিদিন সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করবে। আর খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলেও তার প্রতি মানুষের সমর্থন ও সহমর্মিতা আরও বাড়বে। এতে করে সরকারের ভাবমর্যাদা আরও নষ্ট হবে। এছাড়া খালেদা জিয়া এমনিতেই অসুস্থ। কারাগারের প্রতিদিন অসুস্থ হয়ে পড়লে মানবিক কারণেই তাকে মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিলে সরকারের টার্গেট বাস্তবায়ন হবে না। খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে বিএনপি নির্বাচনেও আসবে না এবং সরকার চাইলেও বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করা। যেহেতু দীর্ঘদিন তাকা কারাগারে রাখা কঠিন হবে, তাই চিকিৎসার কথা বলে তাকে দেশের বাইরে পাঠানোই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য। এ কারণে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি সরকার কৌশলে সামনে নিয়ে এসেছে। এনিয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও সরকার বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা করছে বলে জানা গেছে।
যদি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যান তাহলে আগামী নির্বাচনের আগে তাকে আর দেশে ফিরতে দেবে না সরকার। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে মাইনাস করেই বিএনপিকে নির্বাচনে আনবে সরকার।