অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সরকার পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করছে, এমন অভিযোগ শুরু থেকেই করে আসছেন বিএনপি নেতারা। আর খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ও আদেশ নিয়ে ইতিমধ্যে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিকার অর্থেই নজিরবিহীন। ইতিপূর্বে অন্য কোনো ভিআইপি বা সাধারণ বন্দির জামিন শুনানি বা আদেশ নিয়ে এমন ঘটনার নজির খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাইকোর্ট ইচ্ছে করলে প্রথম দিনেই খালেদা জিয়াকে জামিন দিতে পারতেন। সেই ইখতিয়ার হাইকোর্টের আছে। কিন্তু হাইকোর্ট এটা শুনানির জন্য পরের রোববার দিন ধার্য করেন। রোববার শুনানি শেষে বললেন যে নিম্ন আদালত থেকে নথি না আসা পর্যন্ত আদেশ দেয়া যাবে না। তারপর চেম্বার আদালত ইচ্ছে করলে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটা না করে শুনানির জন্য আবার পাঠালেন প্রধান বিচারপতির আপিল বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি ঠুনকো অজুহাতে খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত করে দেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ কর্তৃক স্থগিত হওয়াকে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন বলে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন। তারা বলছেন, আদালতের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
তবে, আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করলেও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ সত্যটা প্রকাশ করে দিলেন।
শনিবার একটি অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেছেন, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে জামিন দিলেও তিনি মুক্তি পাবেন না। তাকে কুমিল্লার মামলা থেকেও জামিন নিতে হবে।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, সরকারের মনের কথাটাই বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। খালেদা জিয়ার জামিন ও মুক্তি আদালতের ওপর নির্ভর করে না। এটার চাবিকাঠি আইনমন্ত্রীর হাতেই। কুমিল্লার আদালত সরকারের নির্দেশনার বাইরে যাবে না। কারণ, উচ্চ আদালত যেখানে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হয়েও স্বাধীনভাবে কোনো কিছু করতে পারে না সেখানে সরকারের অধীনস্থ নিম্ন আদালততো কিছুই করতে পারবে না। নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সরকার নিজেদের হাতে রেখেছেই এর মাধ্যমে বিরোধীদলকে দমন করবে। নিম্ন আদালতের বিচারকদের সরকারের হুকুমের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তারপর রোববার খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে দুদুক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুইটি আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হবে। আইনমন্ত্রীর আজকের বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতই থাকতে পারে।