অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কথিত দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দি আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। রোববার তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হবে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে সরকার তাকে কারাগারে আটকে রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আইনজীবী ও বিএনপি নেতারা।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দিলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ঘটনার পেছনে ভিন্ন কারণ রয়েছে। আর সেটা হলো ১০০ আসনের রফাদফা না হওয়া।
একটি সূত্র অ্যানালাইসিস বিডিকে জানায়, সম্প্রতি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। বিএনপিকে কীভাবে আগামী নির্বাচনে এনে বিরোধীদলের আসনে বসানো যায় প্রণব বাবু শেখ হাসিনাকে সেই পরামর্শও দিয়ে গেছেন।
আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যে, আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে ১০০ আসন দেয়া হবে। সংসদে তারা বিরোধীদলের আসনে থাকবে। যদি প্রস্তাব নেয়া হয় তাহলে মামলায় খালেদা জিয়াকে খালাস দেয়া হবে। অন্যথায় তাকে কারাগারে যেতে হবে। কিন্তু, খালেদা জিয়া সরকারের এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
এ বিষয়টি বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও চ্যানেলের সম্পাদক ও সিনিয়ন সাংবাদিকরা জেনেছেন। সরকারের রোষানলে পড়ার ভয়ে এ নিয়ে কেউ রিপোর্ট করছেন না।
সরকারপন্থী একটি দৈনিকের সিনিয়র একজন সাংবাদিক বলেছেন, ৮০ আসন মেনে নিলেই খালেদা জিয়াকে আর জেলে যেতে হতো না। এনিয়ে আমরা কিছু লিখতেও পারছি না। রিপোর্ট করলেই গুম হয়ে যেতে হবে।
আরেকটি সূত্র বলেছে, খালেদা জিয়া যদি সরকারের প্রস্তাবে রাজি হতো তাহলে আসন সংখ্যা আরও ২০টি বাড়িয়ে দেয়ার চিন্তা ছিল সরকারের।
সূত্রটি আরও জানায়, সরকার এখন আর জাতীয় পার্টিকে ভাবে না। সরকারের টার্গেট যেকোনো ভাবে আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে এনে বিরোধীদলের আসনে বসানো। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আর করতে চচ্ছে না। তবে, আওয়ামী লীগ এমন নির্বাচনও দেবে না যাতে বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে।
তবে, বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন যথাসময়ে হবে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রীরা এমন বক্তব্য দিলেও পর্দার অন্তরালে বিএনপিকে ম্যানেজ করার জন্য সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করতেছে।