অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে আবারো আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বিএনপিতে মওদুদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো শেষ নেই। দলের ভেতর সবাই তাকে সন্দেহের চোখে দেখেন। মওদুদের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার নামই শুনতে পারেন না। দলের ভেতর তিনি সরকারের দালাল হিসেবেই বেশি পরিচিত।
ব্যারিস্টার মওদুদের বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদাও তাকে বিশ্বাস করেন না। তিনি বিএনপি করলেও দুইটি বইয়ে তিনি বিএনপিকে নিয়ে খুবই আপত্তিকর কথা লিখেছেন বলে বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ। বিশেষ করে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ার পর থেকে খালেদা জিয়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে আগের মতো বিশ্বাস করেন না। আর বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেন মওদুদের কারণেই খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি সংক্রান্ত মামলায় ব্যারিস্টার মওদুদ বাড়ি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চাননি। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি তাঁকে তিনবার স্মরণ করিয়ে দেন, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আপনি কি নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছেন? জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেছিলেন, আমরা এটা চাচ্ছি না।
যার ফলে পরদিনই বেগম জিয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। বিএনপির অনেকেরই ধারণা, ব্যারিস্টার মওদুদ সরকারকে খুশি করতে এই মামলায় ‘দ্বৈত ভূমিকা’ পালন করেছিলেন।
জিয়া অরফানেজ এবং জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার প্রধান কৌসুলী ছিলেন খন্দকার মাহাবুব হোসেন। তাঁকে সহযোগিতা করছিলেন সাবেক পিপি আব্দুর রেজ্জাক খান এবং সানাউল্লাহ মিয়া। এরা সবাই ট্রায়াল কোর্টে মামলা পরিচালনায় অভিজ্ঞ। কিন্তু হঠাৎ মামলার কার্যক্রমেও ব্যারিস্টার মওদুদের উপস্থিতি নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের কানাঘুষা চলছে। বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, মামলার শেষ দিকে হঠাৎ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আসলেন কেন? তারা মনে করছেন, সরকারের যোগসাজসে এরা এই মামলায় মাঠে নেমেছেন।
বুধবার আপিল করার পর খালেদা জিয়ার একজন আইনজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ যে আসলে কী চান সেটা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।
তিনি বলেন, বিচারক আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে বিকৃতি করে তাকে দণ্ড দিয়েছেন। বিচারক এখানে বড় ধরণের জালিয়াতি করেছেন। এই রায় বাতিল ও বিচারকের শাস্তি চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা দরকার। দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক মহলকে জানানো দরকার যে দুই নাম্বারি করে বিচারক খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিয়েছেন। কিন্তু, ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব সেটা না করে আপিল করলেন। আর এতদিন যারা বিশেষ আদালতে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন, মওদুদ সাহেব এখন তাদেরকে খুব একটা পাত্তা দিচ্ছেন না।
অপরদিকে, বিএনপি নেতারা মনে করছেন, খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ দিন জেলে রেখে দল ভাঙার যে নীলনকশা হচ্ছে সেটাতে ব্যারিস্টার মওদুদেরও হাত থাকতে পারে। মওদুদের কারণে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ার মতোই ঘটনা এখানে ঘটতে পারে।